বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত গণজমায়েতে বক্তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার হননকারী ও মানবতাবিরোধী দল। এসব অভিযোগে আওয়ামী লীগের এবং শেখ হাসিনার বিচার হতে হবে। যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চায় তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা একতাবদ্ধ রয়েছে। আহত ও শহীদ পরিবারের চাওয়া হচ্ছে ফ্যাসিস্টদের বিচার। তাই আগে গণহত্যার বিচার করতে হবে। তারপর নির্বাচনে যেতে হবে। তারা বলেন, বাংলাদেশ এখন আর শেখ হাসিনার দেশ নয়, ভারতকে সেটা মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশ এখন ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলবে।
গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিলখানা হত্যাকান্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা এবং আওয়ামী শাসনামলে হওয়া দমনপীড়ন ও শোষণের ভুক্তভোগী বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ ও জনতা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী ও আখতার হোসেন, জোনায়েদ সাকি, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি, আহত ও নিহতদের পরিবারের লোকজন।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট রাজনীতির মাধ্যমে মানবাধিকার হনন করেছিলেন। এ ধরনের মানবতাবিরোধী দলের শাস্তি হতে হবে। শুধু জুলাই আন্দোলন নয়, শুরু থেকেই তারা এমন গুম, হত্যা, জুলুম চালিয়েছে। শেখ হাসিনার হাতে তাঁর বাবার মতোই রক্তের দাগ সব সময় লেগেছিল। তিনি বলেন, পিলখানা, শাপলা চত্বরে, জুলাইয়ে হাসিনা যে গণহত্যা চালিয়ে মানবাধিকার হনন করেছিল একইভাবে শেখ মুজিব বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবাধিকার হনন করেছিলেন। আওয়ামী লীগের বিদায় হয়ে গেছে, এখন প্রশ্ন বিচারের। আমাদের ঐক্যের জায়গা বিচার। বিচারের জন্য জাতীয় সংহতি রক্ষা করতে হবে। এ সরকার থাকা অবস্থায়ই নিশ্চিত করব। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনে জায়নবাদীদের দ্বারা মানবাধিকার হননের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে বিশ্বকে আহ্বান জানান।
নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা ন্যায় বিচার চাই, আগে বিচার তারপর ইলেকশন। আগে বিচার তারপর রাজনীতি। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইশরাক হোসান। লিখিত বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, হাসিনা মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছেন। জাতিসংঘের নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে তিনি গত ১৫ বছরে বিরোধী দল মতের মানুষের ওপর নির্যাতন করেছেন। গুম, হত্যা, জেল-জুলুম চালিয়েছেন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শ্রমিক-জনতার ওপর। এ সময় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া মানবাধিকার কল্পনা করা যায় না। আমাদের গণতন্ত্রকে সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রবাসী সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী জুলকারনাইন সায়ের, পিনাকী ভট্টাচার্য, মোবাশ্বার হাসান, তাসনিম খলিল এরাও ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন।