দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গকারী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে গিয়েছে সিলেট বিএনপি। আওয়ামী সরকারের পতনে অপকর্মে না জড়াতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বারবার সতর্কবার্তা দিচ্ছেন নেতারা। তারপরও কেউ কেউ ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও চোরাকারবারের মতো নানান অপকর্মে জড়াচ্ছেন। অপকর্মের প্রমাণ সাপেক্ষে বহিষ্কারও হচ্ছেন অভিযুক্ত নেতা-কর্মীরা। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও নীতি-আদর্শ বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে কেউ পার পাবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির নেতারা।
সরকারি সম্পদ লুটপাটের ঘটনায় সর্বশেষ গতকাল পদ হারিয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরান। দলীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর এক রাতে জাফলংয়ের পিয়াইন ও ধলাই নদীর উৎসমুখ থেকে শতকোটি টাকা মূল্যের প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর লুট হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাহপরানের পদ স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে বহিষ্কার হন মহানগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সুলেমান হোসেন সুমন ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান। গত ১৩ আগস্ট রাতে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা চিনির ট্রাক ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর সেতুর কাছে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক হন তারা। পরে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাদের সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে কেন্দ্রের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই দুই নেতাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
এ ছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত মঙ্গলবার জকিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছালেহ আহমদ ও বিএনপি নেতা সুলতান আহমদকেও সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি।
গত ১৪ অক্টোবর অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনায় জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আবদুস সালামের পদ স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাকে কেন সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এই মর্মে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল ও সদস্যসচিব শাকিল মোর্শেদ।
এদিকে, দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ডে না জড়াতে কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদল। নেতারা এক বিবৃতিতে বলেন, ষড়যন্ত্রকারী মহলের ইন্ধনে বিচ্ছিন্ন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা বিভিন্ন স্থানে ঘটছে। কিন্তু এসব ঘটনার সঙ্গে যুবদলের কোনো নেতা-কর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। যুবদলের কোনো নেতা-কর্মী অপকর্মে জড়ালে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ‘দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। কারও দ্বারা দলের সুনাম বা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে আমরা বরদাশত করব না। কেউ যত বড় নেতাই হোন না কেন দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’