কুতুবদিয়ায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আমাবস্যার প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধের কারণে ফের জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন দ্বীপবাসী। বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ায় উপজেলার আলী আকবর ডেইল, কৈয়ারবিল ও দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
কিছুদিন আগেও আমাবস্যার জোয়ার ও বাতাসের প্রভাবে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বায়ু বিদ্যুৎ এলাকার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে ডুবে গিয়েছিলো। বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বায়ু বিদ্যুৎ এলাকা প্রায় ৫ ফুট পানির নিচে ছিল। তাই আসন্ন পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে দ্বীপের কয়েকটি ইউনিয়ন। এ উপজেলার ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দারা টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানান।
এদিকে, আসন্ন পূর্ণিমার জোয়ারের পানি ঠেকাতে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধে জিও ব্যাগের মাধ্যমে কিছুটা সংস্কার করা হচ্ছে। এ পূর্ণিমার জোয়ারের সময় সামান্য বাতাস ও পানির চাপ বেশি হলে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি বিনষ্ট হওয়ার আশংকা করেন স্থানীয়রা।
ভাঙা বেড়িবাঁধের কারণে বারবার এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার হতাশা ও আক্ষেপের কথা বলেন স্থানীয় বেলাল উদ্দিন, আবছার উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন সিরাজুল ইসলামসহ অনেকেই। তারা বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে গ্রাম তলিয়ে যায়। তখন গরু-ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে আসি। আর আমরা পানিবন্দী হয়ে না খেয়ে থাকি। পানি নেমে গেলে শুরু হয় ঘর গোছানোর কষ্ট। এরপর আবার পানি ঢুকে, পানি-নামে কিন্তু দুর্ভোগ কমে না।
কুতুবদিয়া উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী এলটন চাকমা জানান, আসন্ন পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে দ্বীপবাসী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য জিও ব্যাগ স্থাপনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে জরুরী ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন চৌধুরীর অধীনে জিও ব্যাগ স্থাপনের মাধ্যমে জোয়ারের পানি ঠেকাতে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হানিফ বিন কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কুতুবদিয়ায় অস্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে আমি কুতুবদিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী এলটন চাকমাকে নিয়ে দ্বীপের বিভিন্ন জায়গার ভাঙা বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করি। কুতুবদিয়াবাসির প্রতি আমার আহবান থাকবে বেড়িবাঁধের কাজ করতে গিয়ে সবাই সজাগ থাকবেন যাতে কোনো অনিয়ম না চলে। বেড়িবাঁধের নিকটস্থ থেকে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগে দেয়া না হয় এবং কাজের মান ভালো রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঠিক ভাবে তদারকি করার আহবান জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল