বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
ই ন্টা র ভি উ ► কুসুম সিকদার

এই পুরস্কারটি আমার কাজের স্বীকৃতি

এই পুরস্কারটি আমার কাজের স্বীকৃতি

বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র ও নাট্যাভিনেত্রী কুসুম শিকদার। ২০১০ সালে ‘গহীনে শব্দ’ দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এরপর লাল টিপ, শঙ্খচিল-এ অভিনয়ের জন্য দর্শক প্রশংসিত হন। শঙ্খচিল-এর জন্য পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কারও। সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন—পান্থ আফজাল

 

শঙ্খচিল ছবিতে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন। অনুভূতিটা কেমন?

এটা আমার কাজের স্বীকৃতি। নিশ্চয়ই অনেক অনেক ভালো লাগছে। দর্শকদের ভালোবাসা তো বরাবরই পাচ্ছি, আর এবার জাতীয়ভাবে এই স্বীকৃতি পেলাম। আসলে দর্শকদের ভালোবাসা ছিল বলেই আজ আমি এই কুসুম সিকদার। কম কাজের পরও এত এত মানুষের ভালোবাসা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। মানুষের ভালোবাসা আর পুরস্কার—দুয়ে মিলে শতভাগ থাকলে জীবন পরিপূর্ণ হতে বাধ্য। হাজার হাজার সিনেমার মধ্য থেকে ২০১৬ সালে শঙ্খচিল ভারতের ৬৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী হয়। প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী হিসেবে আমি এই সৌভাগ্যের অংশীদার হয়েছিলাম। এর পরের বছর তো জয়া আপু পেল। সে সময় আমাকে অভিনয়ের জন্য অনেকেই প্রশংসা করেছিল। আমাকে নিয়ে সে সময় অনেক নিউজ হয়েছিল। আর এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার পেলাম। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

 

যদি এই পুরস্কারটি না পেতেন তবে কেমন লাগত?

পুরস্কার পেয়েছি, সে জন্য আমি আনন্দিত। যদি পুরস্কার নাও পেতাম তাহলেও আমি হতাশ হতাম না। দর্শকদের ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। ছয় বছরে মাত্র তিনটি ছবি করেছি—গহীনে শব্দ, লালটিপ আর শঙ্খচিল। সবগুলোই দর্শকদের ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়িয়েছে। এটাই কম কিসে!

 

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে বিগত কয়েক বছর যাবৎ সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

আমি কিন্তু সমালোচনাকে এপ্রিশিয়েট করি। সমালোচনা থাকবেই। একটি কাজ আপনার কাছে ভালো লাগতেই পারে, আবার অন্যের কাজ একই কাজ খারাপ লাগতেই পারে। এটা তেমন কিছু নয়। এটাই স্বাভাবিক। আসলে যেকোনো জাতীয় পুরস্কারে এসব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে জুরি বোর্ড নির্বাচন করার জন্য থাকে। অনেকগুলো ছবি দেখে ধীরে ধীরে যাচাই-বাছাই করে সংখ্যা কমিয়ে তিন থেকে চারটি ছবি তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সিলেক্ট করে। এগুলোর মধ্যে থেকে সব ক্যাটাগরির সেরা নির্ধারণ করা হয়। এটি আমার মতে একটি ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ক। আমার জানা মতে, পুরস্কারপ্রাপ্ত আমরা দুজনসহ আরও দুজনও ছিল। তারা সেরা না হলেও আমি তাদেরও সেরা বলে মনে করি। হয়তো অনেকের কাছে মনে হতে পারে, ওকে দিল, ওকে কেন দিল না! এটাকে স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হবে সবাইকে। 

 

প্রসেনজিৎ-গৌতম ঘোষের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?

এদের দুজনের সঙ্গে কাজ করা খুবই সৌভাগ্যের ব্যাপার। কারণ দুজনই খুবই বড় মাপের মানুষ। গৌতম ঘোষের সঙ্গে কাজ করতে সবার সৌভাগ্য হয় না; আমার হয়েছে। আর প্রসেনজিৎ দা তো অনন্য উচ্চতায়। তার কথায় পুরো কলকাতা ইন্ডাস্ট্রি চলে। তার সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য সম্মানের বিষয় ছিল। আসলে সব দিক থেকে আমি পজেটিভ ছিলাম।

 

এখন কি কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

খুব বেশি কাজ করার পক্ষে নই আমি। নাটক, ছবি আপাতত করছি না। যে কোনো ছবিতে কাজ করতে প্রস্তুত আমি। তবে সেই কাজের জন্য গল্প ও পরিবেশটা ভালো লাগতে হবে আমার। গত ছয় বছরে মাত্র তিনটি ছবিতে কাজ করেছি। আমি বুঝেশুনেই সামনে কাজ করতে চাই।

 

দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবনা কি?

দেশের চলচ্চিত্র জগতের দুরবস্থা কাটাতে ‘শঙ্খচিল’-এর মতো আরও ছবি হওয়া উচিত বলে মনে করি। নিম্নমানের কাজ করলে ইন্ডাস্ট্রির ইমেজ নষ্ট হয়।

যা ফিরে পাওয়া কঠিন। এই থিওরি নিজের ক্ষেত্রেও কঠোরভাবে মেনে চলি আমি।

 

লেখালেখি, গান গাওয়াকি খবর?

এখন একটু লেখালেখি করছি। সামনে ছোটগল্প নিয়ে ২০২০ সালের মধ্যে বই বের করার প্ল্যান আছে। এর আগে সেরা নতুন কবি হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছিলাম। আর ‘নেশা’ নামে আমি একটি গানও করেছি। এটি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। সামনে আরও ভালো কিছু গান করব। পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েই কাজ করব।

সর্বশেষ খবর