দেশের নন্দিত অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। লাক্স সুপারস্টার হিসেবে শোবিজে যাত্রা করেন তিনি। এরপর টিভিসি, নাটক ও চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। সময়ের নতুন সংযোজন ওটিটির কনটেন্টেও তার উপস্থিতি উল্লেখ করার মতো। গতানুগতিকতার বাইরে বরাবরই ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করেন এই অভিনেত্রী। এই অভিনেত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে পান্থ আফজাল
ঘর-সংসার-জামাই কেমন লাগছে?
বেশ ভালো (মুচকি হেসে)! ভালোই কাটছে সময়টা।
বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে মনে হয় একটু সময় নেওয়া হয়েছে...
বিয়েটা আসলে হওয়ার বিষয়, করার বিষয় না। কারণ, আমি জীবনে বেশ কয়েকবার বিয়ে করার চেষ্টা করেছি (মৃদু হেসে)। আমি মনে করি, বিয়েটা খুবই সুন্দর বিষয়। এইটা হলো সেই বন্ডিং যেটা আসলে ঘটতে হয়। অনেক সময় তুমি চাইলে বা ফ্যামিলি চাইলেও হয় না। এটা হয়ে যায় একসময়। আমাদের দুজনেরও এই মুহূর্তে বিয়ের কোনো প্ল্যান ছিল না। কিন্তু এই যে, হয়ে গেল বিয়ে। আমরা ১২ দিনের নোটিসে বিয়ে করে ফেলেছি...হাহাহা। যেদিন গায়ে হলুদ ওইদিনও বিকালবেলা আমি হাতে মেন্দি দিয়ে কাঁদতেছি যে আমার কিছুই হয় নাই। আমি কি করব! একটু পরেই গেস্ট আসবে। এমন সিচুয়েশন ছিল সে সময়। থ্যাঙ্কস, শেষ পর্যন্ত সব ঠিকমতো হয়েছে।
বিয়ের পর ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে, এমন ভয় কি ছিল?
ভয় পাইনি যে বিয়ে করলে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। এমন কোনো বিষয় কাজ করেনি। আমার কাছে সবসময় একটা জিনিস মনে হয়েছে, তুমি যত ভান করতে থাকবে তত বেশি নিজের আত্মার ক্ষতি করতে থাকবে। মুখোশের কাজই তো একটা সময় খুলে পড়া। সো, মুখোশ যখন খুলবে তখন তোমার আসল চেহারাটা লুকাবে কোন মুখোশের আড়ালে? সো, আমি কখনো ভান করে থাকতে পারি না। আমি সবসময় সৎ থাকার চেষ্টা করি। আমি সব সময় একজন ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি। সুপারস্টার বা স্টার বা ভালো অভিনেত্রী বা সাকসেসফুল উইমেন যাই বলা হোক, আমি সব কিছুর ঊর্ধ্বে থাকার চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি বেটার হিউমেন বিইং হওয়ার।
নয়া মানুষ আসছে। ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা, প্রত্যাশা জানতে চাই।
নয়া মানুষ হচ্ছে একটা স্পেশাল কাজ আমি বলব। গল্পটা খুবই সুন্দর। এর স্ক্রিপটা আমি পেয়েছিলাম আমার বার্থডের দিনে, ২০২২-এ। স্ক্রিপ্টটা পড়ে তখন ভীষণ ভালো লাগে। এরপর ডিরেক্টর সোহেল রানা বয়াতির সঙ্গে দেখা হয়। গল্প নিয়ে কথা হয়। তারপর শুটিং করতে গিয়েছি। খুবই একটা আইসোলেটেড মেঘনার চরে। কানুদির চর নাম। আমরা পুরো টিম ওই চরে ছিলাম। যেখানে ফ্যান নাই, লাইট নাই, ওয়াশরুম, বসার জায়গাও নাই। আমরা মানুষের কাছ থেকে ধার করে পাটি নিয়ে এসে বসেছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মধ্যে শুটিং করেছি। সেই এক অভিজ্ঞতা ছিল।
আর কী কী কাজ সামনে আসবে?
আরও দুইটা ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। একটা রাশিদ পলাশের ‘রঙবাজার’। ওটার কাজ শেষ, ডাবিং শেষ। তারপর আরেকটা সেলিনা হকের উপন্যাস অবলম্বনে অনুদানের একটি সিনেমা করেছি। সেটা হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ‘যাপিত জীবন’। ওইটাও মুক্তির অপেক্ষায়।
মনে পড়ে ছোটবেলার কথা?
অনেক মনে পড়ে। আসলে লাইফের খুবই ইমপরটেন্ট কিছু টাইম মানে শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে বয়ঃসন্ধিকালের পুরো সময়টা আমার কেটেছে গ্রামে। আমার আব্বু যেহেতু আর্মিতে ছিল তাই প্রতি বছরই কিন্তু কোয়ার্টার পেত না। একটা নিয়ম ছিল আর কি! তাই, আমার অনেকগুলো স্কুল। সাতক্ষীরা আমার গ্রাম আর ঢাকা-যশোর মিলে বেশ কয়েকটি স্কুল চেঞ্জ করতে হয়েছে। আমার ক্রুসিয়াল টাইমে কিন্তু গ্রামেই বেড়ে ওঠা। আমি মাটির খুব কাছে থেকে বড় হয়েছি। দাদার সঙ্গে মাছ ধরতে যাওয়া, দাদার সঙ্গে বিলে যাওয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করেছি। রাতের বেলা চাচারা-দাদারা কোচ আর লাইট নিয়ে বিলে বা ঘেরে মাছ ধরতে যেতেন, সঙ্গে আমিও যেতাম। ঝড়ের সময় দৌড়ে কাজিনদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি করে আম কুড়ানো- এমন অনেক অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে।