অভিনয় জগতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর। চার যুগেরও বেশি সময় ধরে সাবলীল অভিনয়ে তিনি জয় করেছেন কয়েক প্রজন্ম। বিশেষ করে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের ভাসিয়েছেন আবেগের জোয়ারে। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
মেইনস্ট্রিম চলচ্চিত্রে আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে না...
মেইনস্ট্রিম চলচ্চিত্রে আমি আর কাজ করতে যাব না হয়তো। কিন্তু ওটিটি ফিল্ম যেগুলো হচ্ছে বা ওয়েব কনটেন্ট, আমি যদি আমার মনের মতো চরিত্র পাই সেগুলো করব। যদি ডিরেক্টর আমাকে চয়েজ করে নিশ্চয়ই করব।
পর্দায় ছিলেন সালমান শাহের মা। বাস্তবে তার সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন ছিল?
পর্দায় যেমন আমি ওর মা ছিলাম বাস্তবেও তাই ছিল। ও আমাকে আম্মু বলে যখন ডাক দিত, মনে হতো আমার ছেলেই আমাকে ডাকছে। মা-ছেলের মতোই আমাদের কথার আদান-প্রদান হতো। একবার অভিনয় করছিল আরেক সেটে। ওর মা চরিত্রটি অন্য আরেকজন করছিল। ওই সেট থেকে আমার কাছে আসার পর আমি বললাম, ‘বাহ! এবারে তোর মা তো দেখতে খুবই গ্লামারার্স, সুন্দর। তোর আজকে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগছে কাজ করতে?’ তখন সালমান আমার কাঁধে হাত দিয়ে কানের কাছে মুখ রেখে বলল, ‘নাহ্, মা মা লাগে না।’ মাঝে মাঝে আমার খুবই কষ্ট লাগে। আমি ইমোশনাল হতে চাই না কিন্তু হয়ে যাই। এই ছেলেটা (সালমান শাহ) বেঁচে থাকলে হয়তো আমাকে ফিল্ম ছাড়তে হতো না।
এ টি এম শামসুজ্জামানের শূন্যতা অনুভব করেন?
কখনো কখনো হঠাৎ আমার মনে হয়, এই মানুষটি তো নাই! তখন কষ্ট লাগে। এ টি এম ভাই ভালো থাকতেই চলে গেছেন, এটা আলহামদুলিল্লাহ! তাঁকে বেশি কষ্ট পেতে হয়নি। এখন যখন কোনো চরিত্র আসে তখন মনে হয়, ‘ইশ ও থাকলে হয়তো আমার সঙ্গে করত।’ আমার হিরো খুঁজে পাওয়া যায় না এখন। এক আবুল হায়াত আর কতটা টানবে।
কখনো এই বয়সে নিজেকে একা অনুভব করেন?
আমি কখনো একা ফিল করি না। এখনো করছি না। আমি হতাশে বিশ্বাস করি না। কারণ আমার জীবনে যখন একবার চাকচিক্য থাকে, সকাল হলে রাত হয় রাত হলে সকাল হয় আমি এটিকে বিশ্বাস করি।
সূর্য যখন থাকবে না চাঁদ উঠবে, চাঁদ যখন থাকবে না সূর্য উঠবে। আমার জীবনেও তা হতে পারে। আমি মেনে নিই। তাই আমার মধ্যে হতাশা বলে কোনো জিনিস নেই। আমি সব সময় প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করি। আমি সবকিছুর পরে রাতের বেলা হলে ওপরওয়ালাকে ধন্যবাদ জানাই। জীবনে আমার পাওয়ার ভাগটাই বেশি, না পাওয়ার ভাগ অনেক কম।
অভিনয় জগতের ব্যস্ততার বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে এখনো আড্ডা দেওয়া হয়?
বাইরের বন্ধু আছে আমার অনেক বেশি। ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের একটা গ্রুপ, কলেজের বন্ধুদের আরেকটা গ্রুপ আর আমার স্কুল জীবনের বন্ধুদের আরেকটি গ্রুপ আছে। প্রায় আমরা এই তিনটা গ্রুপ একসঙ্গে হই। আমি বন্ধুবান্ধব নিয়ে থাকতে ভালোবাসি, আড্ডা মারতে অনেক পছন্দ করি।