ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ভারত একটি শান্তিপ্রিয় দেশ, তবে শান্তি রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। সূত্র : এনডিটিভি
রাজনাথ গত বৃহস্পতিবার ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের এক কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে এ নির্দেশ দেন। তিনি ইউক্রেন এবং গাজায় চলমান সংঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি উল্লেখ করে সামরিক বাহিনীকে এসব ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেন এবং তাদের এসব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। পরে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতেও এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিটি ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাজনাথ সিং ভবিষ্যতের নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ সামরিক দৃষ্টিভঙ্গির তাৎপর্যের ওপর জোর দেন। তিনি পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর চীনের সঙ্গে যে সীমান্ত রয়েছে তার কথাও উল্লেখ করেছেন এবং পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণের জন্য জোর দেন। রাজনাথ সিং বলেন, বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা সত্ত্বেও ভারত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপভোগ করছে এবং শান্তিপূর্ণ বিকাশ অব্যাহত রেখেছে। তবে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময় আমাদের শান্তি বজায় রেখেছি, যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। বর্তমানে আমাদের চারপাশে যা ঘটছে তা গভীর পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এবং ভবিষ্যৎমুখী হওয়ার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রস্তুত থাকা উচিত। আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ব্যর্থ প্রমাণিত করা উচিত নয়। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রাগারে ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জামের সঠিক মিশ্রণ চিহ্নিত করতে এবং অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমান্ডারদের প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়াও তিনি মহাকাশ এবং তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধে সক্ষমতা বিকাশের ওপর জোর দেন। তিনি আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের অবিচ্ছেদ্য করণীয় বর্ণনা করেন।
এক্ষেত্রে তিনি সামরিক নেতৃত্বকে ডেটা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তবে তিনি উল্লেখ করেন, এসব প্রস্তুতি সরাসরি কোনো সংঘাত বা যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য নয়। কেননা পরোক্ষ অংশগ্রহণ অনেকাংশে বর্তমান পরিস্থিতির গতিপথ নির্ধারণ করবে। ভারতের লখনৌতে দুই দিনব্যাপী সশস্ত্র এই কনফারেন্স শুরু হয় গত বুধবার। কনফারেন্সে অংশ নেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠি, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধুরী এবং প্রতিরক্ষা সচিব গিরিধর আরমানে।