চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। রাজনৈতিক ও বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা, শিল্পে প্রবৃদ্ধি দুর্বল হওয়া এবং বন্যায় কৃষির প্রবৃদ্ধি মাঝারি মানের হবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। বুধবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট আপডেটে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। যা সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয় গতকাল।
প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান না থাকা এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আভাসকে ঘিরে যে অনিশ্চয়তা রয়েছে, তাদের পূর্বাভাস তাকেই প্রতিফলিত করছে। কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় স্বল্প মেয়াদে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এ কারণে বিনিয়োগ ও শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়বে না। অন্যদিকে বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে মধ্য থেকে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছে বিশ্বব্যাংক। সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তার ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এ ক্ষেত্রে আর্থিক খাতে সংস্কার, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব বাড়ানোর পদক্ষেপ, ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি ও বাণিজ্য চাঙা হওয়ার বিষয়গুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি কমলেও সার্বিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছরে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা তাদের আগে করা পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। এর ফলে এই অঞ্চল অর্থনীতির দিকে থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অঞ্চলে পরিণত হওয়ার ধারা বজায় রাখবে।
এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নারীদের আরও বেশি হারে নিয়ে আসা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও উদারীকরণ করা হলে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। কেননা দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলটিতে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি হলেও নারীদের কর্মসংস্থান এখন পিছিয়ে রয়েছে।
এতে বলা হয়, সাধারণত প্রবৃদ্ধি বাড়লে কর্মসংস্থানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় থাকলেও এ অঞ্চলের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়েনি। বিশ্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি জরুরি।