জাপানের মানবাধিকার সংগঠন ‘নিহন হিদানকায়ো’ এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। এ সংগঠনটি মূলত ‘হিবাকুশা’ নামে পরিচিত। এটি হিরোশিমা এবং নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করে। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ এবং মানবাধিকারের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। গতকাল বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে নিহন হিদাঙ্কিওর নাম ঘোষণা করে। এটাকে বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের নিরলস প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। নোবেল কমিটির নরওয়ের প্রধান ইয়র্গেন ওয়াতনে ফ্রাইডনেস তার বক্তৃতায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার ওপর যে চাপ পড়ছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো তাদের অস্ত্রাগার আধুনিকায়নও উন্নত করছে। পাশাপাশি নতুন কিছু দেশও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলমান যুদ্ধের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। ফ্রাইডনেস স্মরণ করিয়ে দেন, আগামী বছর হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা দুটি পারমাণবিক বোমার ৮০ বছর পূর্ণ হবে। সেই হামলায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আজকের পারমাণবিক অস্ত্রের ধ্বংসক্ষমতা আরও বহুগুণ বেশি। এ অস্ত্রগুলো কয়েক মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর ওপরও বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলবে। একটি পারমাণবিক যুদ্ধ আমাদের সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, যেমন হিরোশিমা ও নাগাসাকির আগুনে পোড়া মানুষদের ভাগ্যে ঘটেছিল। ফ্রাইডনেসের এই মন্তব্য পারমাণবিক অস্ত্রের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি বিশ্ববাসীকে সতর্ক করতে এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণের গুরুত্বকে আবারও সামনে নিয়ে আসার প্রয়াস। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট জানায়, এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২৮৬। এর মধ্যে ব্যক্তি ছিলেন ১৯৭ জন। আর প্রতিষ্ঠান ৮৯টি। শেষ পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান এবার শান্তিতে নোবেল পেল। গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি। দেশটিতে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। সূত্র : বিবিসি ও আলজাজিরা