পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসী ও বনখেকোদের কাছে জিম্মি বন রক্ষকরা। প্রতিনিয়ত জুম চাষের নামে পাহাড়ি বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে পাহাড়ি উপজাতীয়রা তা কেটে বিক্রি করছে দেদার। দিনদুপুরে অপহরণ করা হচ্ছে বাধাদানকারীকে। গত এক বছরে অন্তত তিনজন বন রক্ষককে অপহরণ করা হয়েছে। ভয়ে মুখ খুলছেন না স্থানীয় জনগণ। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশ করতেও বনখেকোদের অনুমতি নিতে হয় বন কর্মকর্তাদের। শুধু তাই নয় পাহাড়ি উপজাতীয়রা পাহাড়ের বিভিন্ন অংশ কেটে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসতি গড়ে তুলছে। অথচ সেগুলো সংরক্ষিত বনাঞ্চল। যেখানে প্রবেশই নিষিদ্ধ। সেখানে স্থায়ী বসতি, এমন কি মালিকানাও দাবি করছেন তারা। এক্ষেত্রে তাদের বাধা দিতে গেলে বা বিরোধিতা করলে খুন বা গুমের শিকার হতে হচ্ছে বনকর্মীদের। বান্দরবান, লামা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, মহালছড়ি, সাজেক, নীল আচল এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে পাহাড়ি অঞ্চলের সর্বত্রই। একসময় দেশের সবুজ বন-বনানী পশু-পাখির হাঁক-ডাকে মুখরিত ছিল সে এলাকা। আজ সেদিনগুলো হারিয়ে গেছে। ভারসাম্য হারাচ্ছে দেশের প্রকৃতি। দ্রুত বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ। পরিবেশবিদরা এ জন্য নির্বিচারে বনজ সম্পদ উজাড়, অব্যাহতভাবে পাহাড় কাটা এবং জুম চাষের নামে পাহাড়ে অগ্নিসংযোগকে দায়ী করেছেন। শুধু তাই নয় দেশের বিভিন্ন অরণ্যে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে একসময় হাতি, হরিণ, ছোট বাঘ, ভাল্লুক, উল্লুক, বানর, হনুমান, গয়াল, বনবিড়াল, শিয়াল, বনমোরগ, ধনেশ, শকুন, ঘুঘু, শালিক, চড়াই, ময়না, টিয়া, বুলবুলি, চিল, খঞ্জনাসহ নানান ধরনের পশু-পাখি দেখা যেত। অথচ চলতি মাসে এক সপ্তাহ সময় ধরে এসব পাহাড়ি অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়ে এসব প্রাণীর দেখা মেলেনি। তবে কিছু কিছু এলাকায় হাতি, বানর বেজিসহ কিছুসংখ্যক বন্যপ্রাণী দেখা গেছে। বান্দরবান-রাঙামাটি জেলার বরকল, জুরাছড়ি ও লংগদু উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় বানর, অজগর সাপ, বনরুই, হরিণের দেখা মিললেও এর সংখ্যা অনেক কম। হাতির নিরাপদ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জনবসতি স্থাপন ও পাহাড়ে জুম চাষের মাধ্যমে গাছপালা ধ্বংস করায় সংশ্লিষ্ট এলাকার হাতি প্রতিনিয়তই চলে আসছে লোকালয়ে। জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক যেতে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করতে হয়। সে পথের আশপাশের অন্তত অর্ধশত পাহাড় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এ বছরই। সেগুলোতে জুম চাষ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় উপজাতি বাসিন্দারা। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবহেলা ও অসচেতনতায় তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়গুলো প্রতিনিয়ত বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। নিরাপদ আবাস হারিয়ে হিংস্র হয়ে উঠছে বন্যপ্রাণীগুলো। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বন উজাড় ও অবৈজ্ঞানিক পন্থায় পাহাড়ে জুম চাষের কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। চাষাবাদের জমি ও বাড়িঘর তৈরির জন্য ক্রমাগতভাবে এসব বন ধ্বংস হচ্ছে। স্থানীয় দরিদ্র পাহাড়ি জনগোষ্ঠী জীবিকানির্বাহের জন্য বাধ্য হয়ে পাহাড়ের কাঠ, বাঁশ নির্বিচারে কাটছে। ফলে পাহাড়গুলোর সবুজ অবয়ব বিনষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতি বছর অন্তত ১ শতাংশ হারে বনাঞ্চল কমছে। তবে নতুন করে কিছু বনায়ন হওয়ার কারণে এর প্রভাবটা পড়ছে খুব ধীর গতিতে। এজন্য সেটা বোঝা যায় না। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে শুরু করেছে এর জন্য পাহাড়ি বনাঞ্চল ধ্বংস করা অনেকটাই দায়ী। বান্দরবানের সাজেক অঞ্চলের সিয়া তালুসাই নামের এক উপজাতি জানান, জীবিকার তাগিদে তারা গাছ কেটে বিক্রি করেন। অনেক সময় পাহাড়ি জুম চাষের জন্য তা পুড়িয়ে দেন। সরকার তাদের সঠিকভাবে দেখাশোনা করলে বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল পোড়ানো ঠেকানো যাবে।
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ