৩০ অক্টোবর শুক্রবার বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ের ইডব্লিউএমজিএল কনফারেন্স রুমে হয়ে গেল ফ্রাইডে কনটেস্ট-২০১৫ এর নির্বাচিত ২৮-এর জমজমাট চা-চক্র। সারা দেশ থেকে নির্বাচিত তরুণ মডেলদের পদচারণায় মুখরিত ছিল গোটা আঙিনা।
৩০ অক্টোবর, শুক্রবার। সকাল সকাল ইডব্লিউএমজিএল কনফারেন্স রুমে ফ্রাইডে টিমের আনাগোনা শুরু হয়েছে। আমন্ত্রিত অতিথিদের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যস্ততা চলছে। এরই মধ্যে কয়েকজন প্রতিযোগীকে দেখা গেল বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর অভ্যর্থনা প্রাঙ্গণে। ‘লেডিস ফার্স্ট’ কথাটি প্রচলিত থাকলেও সেটি ভুল প্রমাণ হলো। কারণ প্রথমেই যারা এসেছেন তারা পুরুষ প্রতিযোগী। তবে ধীরে ধীরে উপস্থিতি বাড়তে থাকল। বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকেই প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকদের প্রশ্ন ছিল- ফ্রাইডে অনুষ্ঠান কোথায় হচ্ছে? কনফারেন্স রুম তখন প্রতিযোগীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। একে অন্যের সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয় পর্ব সেরে নিয়েছেন। এদিকে নির্ধারিত সময় বয়ে যায়। অনুষ্ঠান শুরু না করে সঞ্চালকের দায়িত্বে থাকা ফ্রাইডে ইনচার্জ রণক ইকরাম তখন মোবাইলকথনে। প্রতিযোগীদের কয়েকজনকে সহজ রাস্তা খুঁজে দিতে ব্যস্ত। ফ্রাইডে টিমের অন্য দুই সদস্য শাকীর এহসানুল্লাহ ও আবদুল কাদের আগত প্রতিযোগীদের স্বাগত জানান। এদিকে স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এটা যে প্রচলিত জ্ঞানগর্ভ কথায় ভরপুর কোনো সভা বা সেমিনার নয় তা বলেই তিনি ফ্রাইডে ফেসবুক পেজের সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্নের উত্তরটি দেন। হালকা মেজাজে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারপর প্রতিযোগীদের পরিচয় পর্ব শুরু করেন সহকর্মী তানভীর আহমেদ। এ সময় প্রতিযোগীরা মডেলিংয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ জানান। জানা যায়, কেউ যেমন স্রেফ শখের বশে কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন আবার কেউ এরই মধ্যে মডেলিংয়ের কাজও করছেন। পরিচয় পর্বের পরপরই প্রতিযোগীদের নিয়ে আসা হয় বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর অফিসে। শামছুল হক রাসেল অতিথিদের বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর পুরো কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান। এক ফাঁকে প্রতিযোগীরা বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজামের সঙ্গে দেখা করেন। নঈম নিজাম প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের শুভকামনা জানান।
জড়তা কাটিয়ে কনফারেন্স রুমে চা-চক্রের পরবর্তী সেশন শুরু হয়। এবার প্রতিযোগীদের প্রশ্ন করার পালা। তাদের ছুড়ে দেওয়া নানা প্রশ্নের জবাব দেয় ফ্রাইডে। কীভাবে সেরা ১০ নির্বাচিত হবে প্রশ্নটি ছিল সবচেয়ে আলোচিত। ইতিমধ্যে আমন্ত্রিতদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে কফির ব্যবস্থা থাকলেও ছিল না চা। প্রতিযোগীরা ফ্রাইডে ইনচার্জের কাছে মৃদু অনুযোগ জানাতেই পারেন- চা-চক্রে চা কই?
প্রশ্নোত্তরের পর শুরু হয় সিঙ্গেল ফটোশুট। উপস্থিত প্রতিযোগীদের পাশাপাশি একাধিক প্রতিযোগী অনুপস্থিত থাকায় ওয়াইল্ডকার্ড পান রোজা আহমেদ। একই ব্যাকড্রপে ফটোগ্রাফার অনিক ও সৌরভ একে একে ক্যামেরাবন্দী করেন উপস্থিত প্রতিযোগীদের। এ ছবিগুলো ফ্রাইডে ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে। সেখান থেকেই নির্বাচিত হবেন সেরা ১০। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানের ছবি ফেসবুক পেজে প্রকাশ হওয়ার পরপরই অংশগ্রহণ না করা প্রতিযোগীরা তাদের আক্ষেপের কথা জানান।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেমা মাহী, জান্নাতুল ফেরদৌস বাঁধন, তাসনিম আক্তার তুলি, তাহমিনা ভূঁইয়া মিনা, শ্রাবন্তী রয়, লুবাবা সিদ্দিকী, তামান্না আহমেদ, রোজা আহমেদ, ওয়াহিদা আদর, তাহেরা তানজিম যুথী, আল-আমিন, সৌরভ মাহমুদ, ম্যাক তামিম মৃধা, হাসান আহমেদ, অরিন জয়, তারিকুল ইসলাম, ড্রিমবয় আবীর, অভি আরিয়ান, উম্মে আরাফাত জাহান, রনি রেজাউল, শামীম ইসলাম, হৃদিতা শেঠ।
ফটোশুট শেষ। কনফারেন্স রুম তখন প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রতিযোগীদের কথোপকথনে। পরিচয় পর্ব ততক্ষণে গড়িয়ে গেছে অনেকটা পথ। হাসিমুখে গ্রুপ সেলফি তুলছে কেউ কেউ। স্মার্টফোন হোক আর প্রফেশনাল ক্যামেরা, যেটাই হোক হাসিমুখে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ ফেসবুকে বন্ধু হয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন এই আনন্দ অভিজ্ঞতা।
বাদ ছিলেন না প্রতিযোগীদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরাও। এদিকে অফিস ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে প্রতিযোগীদের সত্যি সত্যি চা-পান করে চা-চক্রের ষোলকলা পূর্ণ করা হয়েছে। ঢাকা, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসেন প্রতিযোগীরা। ফেরার পথে প্রত্যেকই জানিয়ে গেলেন ভালো লাগার কথা। ছোট পরিসরে চা-চক্রের আয়োজনের কথা থাকলেও প্রতিযোগীদের স্বতঃস্ফ‚র্ততায় সেটি যেন ছাপিয়ে গেছে প্রত্যাশাকে। দিন শেষে তাই দেখা গেল সবার হাসিমুখ।
লেখা : তানভীর আহমেদ