রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের ওখোৎস্ক সাগরে ৬৭ দিন ভেসে থাকার পর একজন রুশ নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। ৪৬ বছর বয়সী মিখাইল পিচুগিন নামে এক ব্যক্তিকে একটি মাছ ধরার নৌকার ক্রুরা খুঁজে পান। তার সাথে থাকা ভাই সের্গেই (৪৯) এবং ১৫ বছর বয়সী ভাগ্নে ইলিয়ার মৃতদেহ ওই নৌকাতেই পাওয়া যায়।
রুশ সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তিকে মিখাইলের স্ত্রী জানিয়েছেন, তারা তিমি দেখতে সাগরে গিয়েছিলেন এবং দুই সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী সাথে নিয়েছিলেন। মিখাইলের ওজন সম্ভবত তার বেঁচে থাকার অন্যতম কারণ হতে পারে। যাত্রার সময় তার ওজন ছিল ১০০ কেজি আর উদ্ধার হওয়ার সময় এখন সেই ওজন মাত্র অর্ধেক।
তিনি আরও জানান, আমার স্বামী মিখাইলের বেঁচে যাওয়া যেন কোনও অলৌকিক ঘটনা। আমাদের মেয়ের প্রথমে এই যাত্রায় যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়।
মিখাইল পিচুগিন, তার ভাই ও ভাগ্নে নিখোঁজ হওয়ার পর একটি হেলিকপ্টার অভিযান তাদের সন্ধানে ব্যর্থ হয়। তবে গত সোমবার ওখোৎস্ক সাগরের কামচাটকা উপদ্বীপের কাছাকাছি মাছ ধরার নৌকার মাধ্যমে নৌকাটি আবিষ্কৃত হয়। প্রসিকিউটর অফিস থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, লাইফ জ্যাকেট পরা দাড়িওয়ালা মিখাইল ক্রুদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলছেন, "আমার আর কোনো শক্তি নেই।" এরপর তাকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।
ওখোৎস্ক সাগরের মতো শীতল পরিবেশে এতদিন কীভাবে টিকে থাকতে পারলেন, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও, রুশ নাবিকদের ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি জানান, সম্ভবত মাছ ধরে আর নৌকায় থাকা সামান্য খাবার দিয়ে তিনি টিকে ছিলেন। মিখাইল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা তার অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রসিকিউশন বিভাগ। নৌকাটি পরিদর্শন করে কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। রিয়া নভোস্তিকে এক বিশেষজ্ঞ জানান, ১৯৬০ সালে চারজন সোভিয়েত সৈনিক প্রশান্ত মহাসাগরে ৪৯ দিন ভেসে থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানবাহী রণতরী তাদের উদ্ধার করেছিল।
সূত্র- বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ