রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ পর্যায়ে। এর প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে। আর আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে এ প্রকল্পে জ্বালানি লোডের প্রথম ধাপ। এরই মধ্যে প্রথম ইউনিটের ডামি ফুয়েল লোডিংয়ের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর কম্পার্টমেন্টে রিফুয়েলিং মেশিনের প্রস্তুতির কাজ শেষ হয়েছে। রিঅ্যাক্টর কোরে ডামি ফুয়েল লোডিংয়ের জন্য এটি সর্বশেষ ধাপ।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম (জ্বালানি) ফুয়েল রিঅ্যাক্টর স্থাপনের আগে কয়েক ধাপে ডামি ফুয়েল দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে হয়। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ডামি ফুয়েল দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এটি ঠিক থাকলে ডিসেম্বরে বা তার আগে ফ্রেশ ইউরেনিয়াম লোড করা হবে। ডিসেম্বরেই প্রথম ইউনিটটির পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। সে সময় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন হবে। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রোসাটমের মহাপরিচালকসহ অন্যদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, রিঅ্যাক্টর কোরে ফ্রেশ পারমাণবিক জ্বালানি লোড এবং কোর থেকে ব্যবহৃত জ্বালানি বের করে আনার জন্য ব্যবহৃত হয় নিউক্লিয়ার রিফুয়েলিং মেশিন। ৬০ টন ওজনের মেশিনটি ফুয়েল পুল ও রিঅ্যাক্টর পিটের ওপরে অবস্থিত। এটির যান্ত্রিক অংশে রয়েছে ব্রিজ, ট্রলি ও সার্ভিস এরিয়া। এ ছাড়া এ মেশিনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একটি কন্ট্রোল ও একটি মনিটরিং সিস্টেম। যার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে পারমাণবিক জ্বালানির ফুয়েলিং/রিফুয়েলিং এবং ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা হয়।
অ্যাটমটেকএনার্গো বাংলাদেশ শাখার পরিচালক ডেনিস মাজলভ বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনের ক্ষেত্রে রিফুয়েলিং মেশিনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফুয়েল অ্যাসেম্বলি নিয়ে এটির কাজ নিখুঁত হওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ স্থানে অনুমোদিত ত্রুটি কোনোক্রমেই ২ মিলিমিটারের বেশি হবে না।
বর্তমানে ফুয়েল লোডিংয়ের জন্য রিফুয়েলিং মেশিনটি প্রস্তুত করতে কাজ করেছেন অ্যাটমটেকএনার্গোর বিশেষজ্ঞরা। রসাটমের ইলেকট্রিক পাওয়ার ডিভিশনের অংশ এ প্রতিষ্ঠানটি এনপিপি কমিশনিং, বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ স্থাপনা তৈরিতে বিশেষভাবে পারদর্শী।
পাবনার রূপপুরে রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় দুই ইউনিটবিশিষ্ট এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টরভিত্তিক প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা হবে ১২০০ মেগাওয়াট। রোসাটম ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন প্রকল্পের জেনারেল কন্ট্রাক্টর ও ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ কবে হবে তা নির্ভর করছে কেন্দ্রটির সঙ্গে সংযুক্ত সঞ্চালন লাইনগুলোর কাজ শেষ হওয়ার ওপর।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ