ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ম্যাগমা মহাসাগরের অবশিষ্টাংশের সন্ধান পেয়েছে। এটা চাঁদের গঠন ও বিবর্তন নিয়ে নতুন তত্ত্ব উদঘাটন করেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় সাড়ে চার শ কোটি বছর আগে চাঁদের পৃষ্ঠ ম্যাগমার সমুদ্রে আচ্ছাদিত ছিল, যা পরবর্তীতে কঠিন হয়ে চাঁদের বর্তমান পৃষ্ঠ তৈরি করেছে।
গত বছরের আগস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার পর থেকে চন্দ্রযান-৩ সেখানে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে পূর্বে অজানা অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে এই মিশন। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে বিজ্ঞানীরা ফেরোয়ান অ্যানর্থোসাইট নামক এক ধরনের খনিজের প্রমাণ পেয়েছেন, যা ম্যাগমা থেকে গঠিত। এই খনিজ চাঁদের পৃষ্ঠ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
বিজ্ঞানী সন্তোষ ভাদাওয়ালে চন্দ্রযান-৩ মিশনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, পুরো অভিযানটি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। নিয়ন্ত্রণকক্ষে বসে রোভারটিকে চাঁদের চারপাশে ঘোরানো সত্যিই দারুণ এক অভিজ্ঞতা।
চাঁদের প্রাথমিক বিবর্তনের তত্ত্বে এই নতুন আবিষ্কারটি শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো মিশনের মাধ্যমে চাঁদের মধ্য অক্ষাংশে ম্যাগমা মহাসাগরের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। তবে চন্দ্রযান-৩ এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ম্যাগমা মহাসাগরের অবশিষ্টাংশের প্রমাণ মিলেছে।
চন্দ্রযান-৩-এর রোভারযান ‘প্রজ্ঞান’ ১০ দিন ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অনুসন্ধান চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। আলফা কণা এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার নামক একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে প্রজ্ঞান রোভার প্রায় চার শ কোটি বছর আগের বিশাল উল্কাপিণ্ডের আঘাতের প্রমাণ খুঁজে পায়, যা চাঁদের দক্ষিণ মেরু-আইটকেন অববাহিকা গঠনে সহায়তা করেছিল। এটি সৌরজগতের বৃহত্তম গর্তগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল