চাঁদে দুর্ঘটনার কবলে পড়া নভোচারীদের উদ্ধারে জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে নাসা একটি বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। ‘লুনার রেসকিউ সিস্টেম’ নামের এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারীরা চন্দ্রপৃষ্ঠে বিপদগ্রস্ত নভোচারীদের নিরাপদে স্থানান্তরের কার্যকর ডিজাইন জমা দিতে পারবেন। সেরা পরিকল্পনার জন্য নাসা ২০ হাজার ডলার পুরস্কার দেবে।
নাসার আর্টেমিস মিশনের অংশ হিসেবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। মিশন পরিচালনার সময় নভোচারীরা চন্দ্রপৃষ্ঠের চরম আবহাওয়া, অসমান পৃষ্ঠভূমি এবং ভারী স্পেসস্যুটের মতো নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার কারণে কোনো নভোচারী অচল হয়ে পড়লে তাকে ২ কিলোমিটার দূরের ল্যান্ডারে পৌঁছে দেওয়ার একটি কার্যকর সমাধান প্রয়োজন।
এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারীদের এমন একটি প্রযুক্তি ডিজাইন করতে হবে, যা নভোচারীকে ২০ ডিগ্রি ঢাল বেয়ে স্থানান্তর করতে পারবে। তবে কোনো রোভার ব্যবহার করা যাবে না। চাঁদের নিম্ন মহাকর্ষ নভোচারীর ওজন কিছুটা কমিয়ে দিলেও, তাঁকে হাতে বহন করা সম্ভব নয়। তাই একটি স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি সমাধান আবশ্যক।
প্রতিযোগিতার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২০২৫ সালের ২৩ জানুয়ারি। আগ্রহীরা HeroX পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। জমা দেওয়া প্রতিটি পরিকল্পনা নাসার বিশেষজ্ঞ দল মূল্যায়ন করবে। পরিকল্পনার ওজন, সহজলভ্যতা এবং নতুন অ্যাক্সিয়ম স্পেসস্যুটের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিবেচনা করা হবে।
নাসার কর্মকর্তা সারা ডগলাস বলেছেন, চাঁদের কঠিন পরিবেশ আমাদের জন্য অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আর্টেমিস মিশনের জন্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানে পানির বরফের উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেই অঞ্চলের পৃষ্ঠভূমি ধারালো পাথর, গভীর খাদ এবং খাড়া ঢালে পরিপূর্ণ, যা নেভিগেশনের জন্য অত্যন্ত কঠিন।
এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবকরা ভবিষ্যৎ চন্দ্রাভিযানের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। নাসার মতে, এই সমাধান শুধু দক্ষিণ মেরুর কঠিন পরিবেশেই কার্যকর হতে হবে না, বরং রোভার ছাড়াই কাজ করতে হবে।
উদ্ভাবকদের জন্য এটি এক বিরল সুযোগ। নাসার এ উদ্যোগ চন্দ্রপৃষ্ঠে নভোচারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবনের দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল