শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে একাদশে ছিলেন না। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলেছেন। শুধু খেলেননি বাঁ হাতি ওপেনার মুর্শিদা খাতুন, ব্যাট হাতেও বাজিমাত করেন। বাংলাদেশ নারী দল টানা দুই ম্যাচে বড় জয় পায়। দুই ম্যাচেই সেরা ক্রিকেটার মুর্শিদা। টানা দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়ে ৫০ রান করেছিলেন বাঁ হাতি ওপেনার। গতকাল ডাম্বুলায় সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ১১৪ রানে। ম্যাচটিতে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন মুর্শিদা। টানা দুই জয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠেছে নারী টি-২০ এশিয়া কাপের। আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় নিগার সুলতানা জ্যোতিদের প্রতিপক্ষ হারমানপ্রিত কাউরের ভারত। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ২০০৪ সালে শুরু এশিয়া কাপের নবম আসর চলছে। আগের আট আসরে একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে ৩ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। বাকি ৭ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
২০১৮ সালের পর এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে খেলতে মালয়েশিয়াকে হারাতেই হতো নিগারদের। বাঁচা-মরার ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে দ্বিধা করেননি নারী অধিনায়ক নিগার। দুই ওপেনার দিলারা খাতুন ও মুর্শিদা ৭.৪ ওভারে ৬৫ রানের ভিত দেন। দুজনে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৫১ রান করেন। দিলারা দলীয় অষ্টম ওভারের চার নম্বর বলে সুইপ খেলে শর্ট স্কয়ার লেগে মাহিরার বলে তালুবন্দি হন আইশা এলিসার। দিলারার ৩৩ রানের ইনিংসটি ২০ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায়। থাইল্যান্ড ম্যাচে ওয়ান ডাউনে খেলেছিলেন ইশমা তানজিম। গতকাল ইশমার বদলে ওয়ান ডাউনে ব্যাটিং করেন অধিনায়ক নিগার। মুর্শিদার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯.২ ওভার বা ৫৪ বলে ৮৯ রান যোগ করেন অধিনায়ক নিগার। মুর্শিদা ৮০ রান করে আউট হন এলসা হান্টারের বলে। ৫৯ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১০টি চার ও একটি ছক্কা। ৫০ রান করেন ৪৫ বলে ৮ চারে। পরের ৩০ রান করেন মাত্র ১৪ বলে। ৪৭ টি-২০ ক্যারিয়ার বাঁ হাতি ওপেনারের এটা ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস এবং ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি। নিগার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। ৩৭ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৫টি চার ও ২টি ছক্কা। ৫০ রান করেন ৩৪ বলে। ৯৮ টি-২০ ম্যাচ ক্যারিয়ারে অধিনায়কের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরি। একটি সেঞ্চুরিও রয়েছে। ২০১৯ সালে এসএ গেমসে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৬৫ বলে ১১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। একই ম্যাচে ফারজানা হক পিংকিও ১১০ রানের অপরাজিত সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছিলেন। গতকাল ডাম্বুলার রাংগিলি স্টেডিয়ামে মুর্শিদা ও নিগারের হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৯১ রান। এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে পোখারায় মালদ্বীপের বিপক্ষে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২৫৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। টি-২০ ক্রিকেটে নারী দলের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্কোর।
টার্গেট আকাশসমান ১৯২ রান। আগের দুই ম্যাচে হারা মালয়েশিয়ার টপকানো যা অসম্ভব। দলটির সঙ্গে শক্তি ও সামর্থ্যরে পার্থক্যও অনেক। গতকাল একাদশে ফিরেন পেসার জাহানারা আলম। আগের দুই ম্যাচে সাজঘরে বসে খেলা দেখেন জাহানারা। গতকাল খেলতে নেমে ৪ ওভারের স্পেলে ২০ রানের খরচে নেন ১ উইকেট। তাকে খেলানো হয় মারুফার বদলে। আগের দুই ম্যাচের মতো গতকালও দারুণ বোলিং করেন বাঁ হাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। ৩ ম্যাচে ১২ ওভারে ৩৯ রানের খরচে নেন ৫ উইকেট। নাহিদার গতকালের স্পেল ৪-০-১৩-২। সাবেক অধিনায়ক রুমানা ছাড়া বাকি সবাই উইকেট পেয়েছেন। নাহিদা ২টি এবং একটি করে উইকেট নেন সাবিকুন নাহার জেসমিন, স্বর্ণা আক্তার, রাবেয়া খান ও রিতু মণি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ১৯১/২, ২০ ওভার (দিলারা আক্তার ৩৩, মুর্শিদা খাতুন ৮০, নিগার সুলতানা ৬২*, রুমান আহমেদ ৬*; দুরাইসিঙ্গাম ৪-০-৪০-০, মানিভানান ৪-০-৪০-০, এলিসা ২-০-২৭-০, হামিজাহ ১-০-১১-০, মাহিরাহ ৪-০-৩৫-১, সাফিকা ১-০-১১-০, এলসা ৪-০-২৭-১)।
মালয়েশিয়া : ৭৭/৮, ২০ ওভার (এলসা ২০, মাহিরাহ ১৫, নাজওয়া ৪, এলিসা ১, মানিভানান ৮, সাফিকা ২*; জাহানারা আলম ৪-০-২০-১, নাহিদা আক্তার ৪-০-১৩-২, সাবিকুন নাহার জেসমিন ৪-০-১৭-১, রাবেয়া খাতুন ৩-০-১০-১, রিতু মণি ১-০-২-১, স্বর্ণা আক্তার ৩-০-৭-১, রুমানা আহমেদ ১-০-৫-০)।
ফল : বাংলাদেশ ১১৪ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : মুর্শিদা খাতুন।