‘মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান দলের সিনিয়র ক্রিকেটার। ছেলেদের সঙ্গে তাদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে।’ দলের সবচেয়ে সিনিয়র দুই ক্রিকেটার একত্রে ১৫৫ টেস্ট খেলেছেন। রান করেছেন ৯৫৮১। সেঞ্চুরি করেছেন ১৫টি এবং হাফ সেঞ্চুরি ৫৮।
লাহোরে তিন দিনের অনুশীলন শেষ নাজমুল হোসেন শান্তদের। রাওয়ালপিন্ডিতে নতুন বসতি গড়েছেন আজ। ২১-২৫ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি খেলবে। লাল বল ও সাদা পোশাকে পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, খুররম শাহ, মোহাম্মদ আলি, মীর হামজাদের গতি, সুইং ও বাউন্সের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে নাজমুল, সাদমান ইসলাম, লিটন দাস, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের। স্বপ্নের সিরিজ খেলতে টাইগারদের সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব অনেক বেশি। দলের ভারপ্রাপ্ত স্পিন কোচ পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব ও মুশফিকের দায়িত্ব অনেক বেশি ‘মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান দলের সিনিয়র ক্রিকেটার। ছেলেদের সঙ্গে তাদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে।’ দলের সবচেয়ে সিনিয়র দুই ক্রিকেটার একত্রে ১৫৫ টেস্ট খেলেছেন। রান করেছেন ৯৫৮১। সেঞ্চুরি করেছেন ১৫টি এবং হাফ সেঞ্চুরি ৫৮।
শুধু মুশফিক ও সাকিব কেন, দলে রয়েছেন আরেক সিনিয়র মুমিনুল হক। টেকনিক, টেম্পারমেন্ট ও স্কিলের জন্য যাকে বলা হয় দেশের একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার। ৩৩ বছর বছর বয়সি মুমিনুল ৬১ টেস্টের ১১৪ ইনিংসে রান করেছেন ৪০৫৮। দেশের ক্রিকেটারদের সবচেয়ে বেশি টেস্ট গড় সাবেক এ অধিনায়কের। সেঞ্চুরি করেছেন ১২টি। যার ২টি আবার উভয় ইনিংসে। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭৬ ও ১০৫ রান করেছিলেন। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি রয়েছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুলেরও। ২০২৩ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৪৬ ও ১২২ রান করেছিলেন। নাজমুল ২৭ টেস্টে ১৪৮১ রান করেন। যার সেঞ্চুরি ৫টি ও হাফ সেঞ্চুরি ৩টি। আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার লিটন দাস খেলছেন ২০১৫ সাল থেকে। ৪১ টেস্টে রান করেছেন ২৪৬১। সেঞ্চুরি ৩টি। মেহেদি হাসান মিরাজও সিনিয়র ক্রিকেটার। ডান হাতি অফ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজও পিছিয়ে থাকবেন না। ৪৩ টেস্টে এক সেঞ্চুরিতে ১৪৭০ রান করেন। উইকেট নিয়েছেন ১৬৪টি। বাঁ হাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম সুযোগ পেয়েছেন অনেক দিন পর। ১৩ টেস্টে তার রান এক সেঞ্চুরিতে ৫৫৯। ব্যাটিং লাইনকে রান করতে হবে। রাওয়ালপিন্ডিতে ২০২০ সালে খেলে হেরেছিল ইনিংস ও ৪৪ রানে। এ মাঠে রান ওঠে। উইকেট ফ্ল্যাট। সর্বশেষ যে টেস্টটি হয়েছিল রাওয়ালপিন্ডিতে, সেখানে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। অথচ প্রথম দুই ইনিংসে দুই দলের স্কোর ছিল ৬০০ করে। সেঞ্চুরি ছিল ৭টি। টাইগার ব্যাটারদের গতি ও বাউন্সের বিপক্ষে দুর্বলতা জেনে পিসিবি উইকেটে ঘাস রাখতে চাচ্ছে। উইকেটে ঘাস থাকার আভাস দিয়েছেন টাইগারদের মূল স্ট্রাইক পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, উইকেটে ঘাস থাকবে। যা পেসারদের বাড়তি সহায়তা দেবে।’ প্রস্তুত টাইগার পেসাররাও। কিন্তু কঠিন লড়াই করতে হবে ব্যাটারদের। যদিও দলের মূল ব্যাটারের সবাই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন। মুশফিক ৬ টেস্টে ২৯.১৬ গড়ে ২ হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৫০ রান করেন। সর্বোচ্চ ৯১। পাকিস্তানের বিপক্ষে সবচেয়ে সফল ব্যাটার সাকিব। ৫ টেস্টে দেশসেরা অলরাউন্ডার ৬৩.৫০ গড়ে রান করেছেন ৫০৮। সেঞ্চুরি ১টি ও হাফ সেঞ্চুরি ৪। সর্বোচ্চ ১৪৪ রান। উইকেট নিয়েছেন অবশ্য ৯টি। অধিনায়ক নাজমুলের রান পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ টেস্টে ১৩২। লিটন ৩ টেস্টে রান করেছেন এক সেঞ্চুরিতে ৪৭.৬৬ গড়ে ২৮৬। এ ছাড়া সাদমান ২ টেস্টে ২০, মুমিনুল ৫ টেস্টে ২ হাফ সেঞ্চুরিতে ২৬৭ রান। সর্বোচ্চ ৮০।
ঢাকা ছাড়ার আগে টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের স্বপ্ন দেখতে বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জেতার জন্যই খেলবে। টাইগার স্পিন কোচ মুশতাক বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের পক্ষে সেটা সম্ভব, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। ক্রিকেটাররা যদি স্কিলের ওপর বিশ্বাস রাখেন, নিজেদের ওপর আাস্থা রাখেন, তাহলে আমি বিশ্বাস করি অবশ্যই তারা ভালো করবে। যদিও প্রতিপক্ষ দলে ভালোমানের পেসার রয়েছে। আশা করছি, টাইগাররা দেশের বাইরে জয় দিয়ে শুরু করবে।’