বায়ুদূষণের ভয়াবহতা পিছু ছাড়ছে না ঢাকাবাসীকে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই গতকাল রাজধানী ঢাকা আবারও ঢাকাবাসীর জন্য দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এলো। বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে রাজধানী ঢাকার অবস্থান শীর্ষে রয়েছে। বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ২৪০ ছিল। বাতাসের এই মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত- সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে। গতকাল সকাল সোয়া ৮টার দিকে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইরাকের বাগদাদ ও পাকিস্তানের লাহোর। দুই শহরের স্কোর যথাক্রমে ২৩৭ ও ২২৬।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা অস্বাস্থ্যকর বাতাস। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে খুবই অস্বাস্থ্যকর বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। ঢাকার বাতাস গতকাল ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। এই বায়ু সেবন যে কোনো মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। ঢাকা ও আশপাশের যে দুই অঞ্চলের দূষণ পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত বেশি খারাপ, সেগুলোর মধ্যে ছিল আইসিডিডিআরবি ও আরামবাগ এলাকা। এসব স্থানে দূষণের স্কোর যথাক্রমে ৪১৬ ও ৩০০।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। গতকাল ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৩০ শতাংশ বেশি।
ঢাকায় বায়ুদূষণের যে অবস্থা, সেখান থেকে সুরক্ষায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে আইকিউএয়ার। এর মধ্যে আছে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা, খোলা স্থানে ব্যায়াম না করা এবং জানালা বন্ধ করে রাখা।