১১ জুন, ২০২২ ১৫:০৮

ধানের উৎপাদন খরচ কমাতে যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ধানের উৎপাদন খরচ কমাতে 
যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই

এবার রংপুরের বিভাগের ৮ জেলায় কৃষি মৌসুমি শ্রমিক বোরো মৌসুমে ধান কেটে ও মাড়াই করে একমাসে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় করছেন। গত কয়েক মৌসুম থেকে কৃষি শ্রমের মূল্য ৫/৬ গুণ বৃদ্ধি হওয়ায় শ্রমিকরা খুশি হলেও ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে পুরোপুরি যান্ত্রিকীকরণ করা হলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে যেত; এমনটাই মনে করছে কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, রংপুর বিভাগে ৮ জেলার চাষিরা ৮ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে। এ পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ৩৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান গোলায় তোলার আশা করা হচ্ছে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, শনিবার পর্যন্ত ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ ধান কাটা ও মাড়াই হয়েছে। তবে ধান কাটা ও মাড়াই করতে কৃষি শ্রমিক পাওয়াই দুস্কর হয়ে পড়েছে। দিন হাজিরায় শ্রমিকরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা করে পারিশ্রমিক নিয়েছে।

কৃষিবিদদের মতে, ধান কাটা মাড়াই যান্ত্রিকীকরণ করা হলে ধানের উৎপাদন খরচ ও সময় দুটোই কম হবে। রংপুর জেলায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা হয়েছে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর। একই অবস্থা বিভাগের আন্য জেলাগুলোতে।

মিঠাপুকুরের কৃষক হাবিবুর রহমান, আশরাফুল,রংপুরের পর্শুরাম এলাকার আমিন, মন্টু মিয়া গঙ্গাচড়ার গান্নারপাড় এলাকার মিজানুরসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাট বাজারগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির বোরো ধান কেনা বেচা হচ্ছে  ৯’শ থেকে প্রায় ১০০০ টাকা। 

কৃষকরা জানান, ৫ বছর আগেও ১ একর জমির ধান কাটা মাড়াই করতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লাগত। এক দোন (২৪ শতক) জমির ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে কৃষকদের খরচ হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা। সেই হিসেবে প্রতি একরে খরচ পড়ছে ১০ হাজার টাকার ওপর। দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করত তাদেরও মজুরি বেড়েছে কয়েকগুণ। ৫ বছরআগে দেড়শ টাকায় যে শ্রমিক দিন হাজিরায় কাজ করত এবার তারা ৫০০ টাকার নিচে কাজ করছে না। কোনো কোনো স্থানে তিন বেলা খাওয়াসহ এই হাজিরা পাচ্ছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,রংপুর বিভাগে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ কৃষি শ্রমিক রয়েছে। এরা শুধু আমন ও বোরো মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করেন। শ্রমের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এসব শ্রমিক এবার ২০০ কোটি টাকার ওপর আয় করেছেন। এবার ধান কাটা ও মাড়াই করে ওইসব শ্রমিক ভাল থাকলেও ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, এ পর্যন্ত ৯৭ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা ও মাড়াই হয়ে গেছে। যান্ত্রিকীকরণ প্রতি বছরই বাড়ছে। কাটা- মাড়াই যান্ত্রিকীকরণ হলে ধানের উৎপাদন খরচ কিছুটা কমবে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর