২০ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:৩১

মাঠজুড়ে সোনালি ধান, কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

মাঠজুড়ে সোনালি ধান, কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা

হালকা বাতাসে সমুদ্র উপকূলীয় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুই একটি পাখি-কীটপতঙ্গ খাওয়ার আশায় হানা দিচ্ছে ক্ষেতে। ইতিমধ্যে সোনালি বর্ণ ধারণ করেছে শীষ। আর কয়েক দিন পরেই পটুয়াখালীর কলাপাড়ার গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে ধান কাটা, মাড়াই ও নতুন ধান ঘরে তোলার মহোৎসব।

তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালি স্বপ্ন পূরণের ছাপ। এ উপজেলায় দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে কৃষক পরিবার রয়েছে ৩৫ হাজার ৫০০টি। মোট জমি ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর। এ বছর ৩১ হাজার ২৪০ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ৫৫০ হেক্টরে মৌসুমী উফশী রোপা আমন ও ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে মৌসুমি স্থানীয় রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। এছাড়া সবজি চাষ করা হয়েছে ৫৪০ হেক্টর জমিতে। তবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ধানের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ৯২১ হেক্টর। আংশিক ক্ষতি ৫ শতাংশ হারে সম্পূর্ণ ক্ষতির পরিমাণ ৪৬.০৫ হেক্টর। এছাড়া সবজি ফসলে ৫৪ হেক্টর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০ শতাংশ হারে সম্পূর্ণ ক্ষতি ১০.০৮ হেক্টর বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হবে ধান তোলার পালা। তাই ধান কাটার জন্য নতুন কাস্তে তৈরি করতে দিয়েছে অনেকে। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করাচ্ছে কামার বাড়িতে। কেউ কেউ মেশিন দিয়ে ধান কাটার জন্য আগাম বায়নাও দিয়ে রেখেছেন। এছাড়া অনেকেই ধান রাখার জন্য বাড়ির আঙিনা সুন্দরভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন। এ জনপদে কৃষকদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

কৃষকরা জানান, আগে প্রতি ২৬৬ শতক জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে মাড়াই পর্যন্ত খরচ হতো ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ বছর একই জমিতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া বাজারের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরিতেও শ্রমিক পাচ্ছে না।

উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষেতের তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। সার-ওষুধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এখন পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে।

নবীপুর গ্রামের কৃষক নিঠুর হাওলাদার বলেন, প্রথম দিকে বৃষ্টি না থাকায় জমিতে চাষ করতে একটু দেরি হয়েছে। তার পরও এ বছর ক্ষেতের ফসল ভাল। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া গেলে দুই-চার দিনের মধ্যেই ক্ষেতের ধান কাটা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে উপজেলার কৃষকদের আমন ধান ক্ষেতের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ক্ষেতের ফসল সুন্দরভাবে কাটতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

সর্বশেষ খবর