৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:০৪

কৃষিতে নতুন বিপ্লব-কৃষকের মুখে হাসি

লাকসাম প্রতিনিধি:

কৃষিতে নতুন বিপ্লব-কৃষকের মুখে হাসি

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ধান রোপণে এসেছে নতুন আধুনিক প্রযুুক্তির সমলয় পদ্ধতি। খরচ তুলনামুলক কম হওয়ায় এ পদ্ধতি দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চাষাবাদে এতদিন খরচের যাতাকলে পিষ্ট কৃষকের মলিন মুখে প্রযুক্তির ব্যবহারে এখন হাসি ফুটেছে। কৃষিতে সূচিত হতে যাচ্ছে নতুন বিপ্লব। চলতি বোরো মৌসুমে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার ন্যায় কুমিল্লার লাকসামেও সমলয় পদ্ধতিতে জমিতে ধান রোপণ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ধান চাষে কৃষকের যেমন সময়, শ্রম ও খরচ বাঁচবে তেমনি উৎপাদনও হবে বেশি। এতে লাভবান হবেন কৃষকরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক প্রযুুক্তির সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ দেখতে শত শত কৃষক ও উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছে। এ সময় তাদের বেশ উৎফুল্ল দেখা যাচ্ছে। পদ্ধতিটি সহজ ও খরচ কম হওয়ায় সকল এলাকায় এ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদের দাবি জানান তারা।

বাংলাদেশের কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট ‘রাইস ট্র্যান্সপ্লান্টার কাম সার প্রয়োগযন্ত্র’ উদ্ভাবন করেছে। রাইস ট্র্যান্সপ্লান্টার কাম সার প্রয়োগ যন্ত্রের সাহায্যে জমিতে ধানের চারা রোপণ ও সকল সার একসাথে প্রয়োগ করা যায়। এতে কৃষকের অর্থ ও সময় সাশ্রয় করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে রোপণের উপযোগী চারা বিশেষ পদ্ধতিতে ট্রে’র মাধ্যমে চারা উৎপাদন করতে হয়। অত্যন্ত কম খরচ ও কম সময়ে অধিক জমিতে চারা রোপণ করা যায় এবং বীজতলা তৈরির জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন নেই। এতে কৃষকরা অধিকতর লাভবান হন।

লাকসাম উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে। সাথে ফলন বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল এ এলাকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। এখন তারা এ পদ্ধতিতে ধান চাষে আগ্রহী। আমরা এই মৌসুমে সবাইকে সুযোগ দিতে পারছি না। এবার প্রণোদনার আওতায় থাকা ৬৩ জন কৃষক এই সুবিধা পাচ্ছেন। সকল জমি কমসূচির অর্থায়নে রোপণ এবং মৌসুম শেষে এসকল জমির ধান কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আলী আহমদ বলেন, এবার লাকসামসহ কুমিল্লার বুড়িচং ও সদর দক্ষিণ উপজেলার প্রায় ৪০০ একর জমিতে রাইস ট্র্যান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এ কমসূচি আমরা সরকারি প্রণোদনা ও প্রকল্পের আওতায় গ্রহণ করি। আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষের কারণে সময় কমে আসবে, ফলনও বেশি হবে।

আধুনিক প্রযুুক্তির সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষে সময়, শ্রম ও খরচ তুলনামুলক অনেক কম হওয়ায় কৃষকরা খুব খুশি। তাদের ধারণা এটি কৃষিক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব সূচিত করবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর