দুপাশে চা বাগানে সবুজের সমারোহ। মাঝখানে সড়ক। আর সড়কের দুই পাশে সারি সারি ফুল গাছ। গাছে গাছে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া-রাধাচূড়া, জারুল-সোনালু।
এসব লাল, হলুদ আর সোনালী রঙ্গের ফুলে রঙ্গিণ হয়ে উঠেছে সড়ক। সবুজ প্রকৃতি যেন আরো মোহনীয় হয়ে উঠেছে। ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই এই সড়কে ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমী, দর্শনার্থী, পর্যটক ও তরুণ-তরুণীরা। তারা সড়কে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, রিল বানাচ্ছেন, করছেন টিককক। ইতিমধ্যেই এই সড়কটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভাড়াউড়া চা বাগানের ফাঁড়ি বাগান ভুরভুরিয়া চা বাগানের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকা-বাঁকা শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কে এলেই প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পরে। দেখে মনে হবে রং তুলিতে আঁকা ছবি। স্থানীয়দের পাশাপাশি এই উপজেলায় আসা পর্যটকরাও মুগ্ধ হচ্ছেন ফুলের এই সৌন্দর্যে।
জানা জায়, প্রায় ১০ বছর আগে গোলাম মোহাম্মদ শিবলী এই সড়কের বধ্যভূমি ৭১ থেকে চা গবেষণা ইনস্টিটিউট পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটারে সড়কে দুই পাশে নানা ফুলের গাছ লাগান । এই গাছগুলো বড় হয়ে গত দুই বছর ধরে ফুল ধরতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সারি সারি এসব গাছে লাল, হলুদ, সোনালী শোভায় মেলে ধরেছে তাদের সৌন্দর্য। এ পথে চলাচলকারী পথচারী, পর্যটক-দর্শনার্থী, প্রকৃতিপ্রেমীরা ফুলে ফুলে ভরা এসব দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত হয়ে ছবি তুলছেন। কেউ একটু দাঁড়িয়ে রঙ্গিন প্রকৃতির স্বাদ নিচ্ছেন। কেউবা হেঁটে হেঁটে দেখছেন সড়কের দুই পাশের সৌন্দর্য। আবার তরুণ-তরুণীরা সড়কে দাঁড়িয়ে করছেন রিলস, টিকটক। আবার এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই চলাচল করছে ছোট-বড় গাড়ি। এতে দুর্ঘটনার আশংকা করছেন অনেকে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মোশাররফ হোসেন বলেন, সড়কের দুই পাশে ফোটা ফুলগুলো দেখে খুব ভালো লাগেছে। এখানকার সবুজ প্রকৃতি বিভিন্ন ফুলের রঙে রঙ্গিন হয়ে আছে। যে কেউ দেখলে মন ভরে উঠবে।
শ্রীমঙ্গল ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম বলেন, সড়কের এই ফুল গাছগুলো শ্রীমঙ্গলে পর্যটনে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। বাইকারদের কাছেও খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
হদয় শুভ বলেন, যারা ওই সড়কে রিলস টিকটক ভিডিও করেন তাদের মাথায় রাখতে হবে এটা একটা সড়ক। রাস্তার ঠিক মধ্যে দাড়িয়ে তরুণীদের ভিডিও বানাতে দেখা যায়। এটা খুবই বিপদজনক; যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, ‘নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই গাছগুলো লাগিয়েছিলাম। এখন গাছে ফুল এসেছে দেখে খুশি লাগছে। ফুল দেখতে কত মানুষ আসছে। সবার কাছেই এই জায়গা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটা আমার কাজের সার্থকতা বলে মনে করি।'
বিডি প্রতিদিন/হিমেল