পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছে রিমার। দিনমজুরের মেয়ে হয়েও বিএ পাস করা রিমা আক্তার বিয়ের পর জানতে পারেন স্বামী বেকার। আয়-রোজগারের কোনো পথই নেই তাঁর। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য স্বামীর চাপ ছিল নিত্য ঘটনা।
চুন থেকে পান খসলেই ছেড়ে দেওয়ার হুমকি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিন বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন রিমা আক্তার। অসহায় বাবার কাছে বোঝা হলেও কিছুই করার ছিল না। রিমার বাবার বোঝা লাঘবের দায়িত্ব নেয় বসুন্ধরা শুভসংঘ।
তাঁদের বাড়ির পাশেই বসুন্ধরা শুভসংঘ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করে নেওয়া হয় রিমাকে। তিন মাস প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় সেলাই মেশিন। এত দিন যে স্বামী কোনো খোঁজখবরও নিতেন না, সেই স্বামী সন্তানকে দেখার অজুহাতে আসেন স্ত্রী রিমার কাছে।
শুরু হয় রিমার নতুন জীবন। স্বামী নিজেই উদ্যোগ নেন কাস্টমার সংগ্রহ করার। দুজনের এই উদ্যোগে কাপড় সেলাইয়ের জন্য রিমার কাছে আসতে থাকে প্রতিবেশীরাও। তাদের দেওয়া কাপড় সেলাই করে ভালোই আয় হতে থাকে। স্বামীকেও ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালান রিমা।
সেই চেষ্টায় সফলও হন তিনি। সেলাই করা কাপড় স্বামীকে দিয়ে পাঠান স্থানীয় দোকানে দোকানে। বড় একটা আয়ের পথ তৈরি হয়।
রিমা জানান, স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসার পর এমন একটা অবস্থা হয়েছিল, সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেওয়াও সম্ভব ছিল না। স্বামী কোনো খোঁজখবর নিতেন না। হতাশায় মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখনই পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। এখন এই সেলাই মেশিনই আমার সব। এটাই আমার সম্পদ। আমার জীবন বদলে দিয়েছে এই মেশিন। এককথায় আমার জীবনবদলের যন্ত্র এটা। আগে যেখানে আমার কোনো স্বপ্নই ছিল না, ছিল শুধু দুঃস্বপ্ন; সেখানে এখন আমি নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছি।