জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে পাখিদের বসবাসের জন্য গাছের ডালে মাটির কৃত্রিম বাসা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বৃহস্পতিবার হোপের হাটে থাকা গাছের ডালে ৫০টি বাসা বেঁধে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের ক্ষেতলাল শাখার সভাপতি এম রাসেল আহমেদ।
এ জেলার প্রাণকেন্দ্র জুড়ে আছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। সবুজে ঘেরা এ প্রকৃতি দোলা দেয় বাতাসে। জেলায় প্রচুর ধান, আলু, সরিষা, আখ, পাট, কলা, কচু জন্মে। জমিতে কীটনাশক ছিটাতে হয় পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে। আগের দিনে পাখিরা এসব পোকা-মাকড় খেয়ে বাঁচত। কীটনাশক ব্যবহারে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া বড় বড় গাছ কাটার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে পরিবেশ রক্ষাকারী পাখি। আগে গাছে-গাছে পাখির বিচরণ ছিল দেখার মতো। কিন্তু সেদিন আর অবশিষ্ট নেই। এখন আর আগের মতো পাখি দেখা যায় না।
তাই গাছের ডালে পাখিদের বাসা বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ - ‘শুভ কাজে সবার পাশে’ নামের সংগঠনটি।
এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি ও পরিবেশ কর্মী এম রাসেল আহমেদ বলেন, পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষায় পাখিদের ভূমিকা অপরিসীম। পরিবেশ-প্রকৃতির জন্য জয়পুরহাট জেলা এক অনন্য ভাণ্ডার। কিন্তু নানান কারণে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বড় গাছ না থাকায় পাখিরা আশ্রয়স্থল হারাতে বসেছে। পাখিদের আশ্রয়স্থল হারানো খুবই বেদনাদায়ক। এ অবস্থা অনুধাবনের পর আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য গাছের ডালে মাটির বাসা বেঁধে দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে শত শত বাসা বেঁধে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করলাম। পাখিদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, শুরুতে আমরা রাস্তার পাশে বড় বড় বট, পাকড় গাছে এসব বাসা বসাবো। পাখির সংখ্যা বাড়ানো ও বিলুপ্তপ্রায় পাখি ফিরিয়ে আনতে গাছে গাছে পাখির নিরাপদ বাসা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। আমরা নিয়মিত এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকি।
বসুন্ধরা শুভসংঘ ক্ষেতলাল শাখার উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম বলেন, পর্যায়ক্রমে পুরো জয়পুরহাটের মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, বাগান বাড়ি, রাস্তার পাশের গাছে গাছে তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এসব বাসা রক্ষণাবেক্ষণ এবং পাখি শিকার বন্ধেও আমরা কাজ করছি। আশা করছি এ কার্যক্রমের কল্যাণে পাখিরা ফিরে আসবে।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম বলেন, আগে আমাদের এলাকায় অনেক পাখি ছিল। দিন দিন এলাকায় পাখিশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। পাখিদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরিতে যুবসমাজ যে ভূমিকা নিয়েছে, তাতে আমি সত্যি গর্বিত। আগে আমরা বিভিন্ন গাছে পাখির বাসা দেখতাম, এখন আর সে বাসা দেখা যায় না। আশা করছি পাখিরা এই কৃত্রিম বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করবে।
এ সময় উস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রচার সম্পাদক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, দপ্তর সম্পাদক আমির হোসেন, কার্যকরী সদস্য আশিকুর রহমান, নাফিস, রনি, আবিদসহ এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল