আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মো. আল আমীন আকাশ রাবি স্কুল এন্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। সে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকনের অনুসারী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর সরকার অভি, সাজ্জাদ, রাকিব ও গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হামজা। এদের মধ্যে অভির বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর এলাকায় এবং সে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তঃবর্ষ সংগঠন ‘উই আর ৬৫’র নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা আকাশ। মঙ্গলবার বিকেলে শহীদ মিনারের বাগানে বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের আলোচনায় ডাকে আকাশ। আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর সরকার অভির নেতৃত্বে সাজ্জাদ, রাকিব ও হামজা ভুক্তভোগী আকাশকে এক পাশে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় আকাশের কাছে থাকা সংগঠনের কাগজ-পত্র চেয়ে বলে এখন থেকে সংগঠনের নেতৃত্ব দেবে অভি ও তার সঙ্গীরা। এসময় দু পক্ষে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অভির সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা আকাশকে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারতে থাকে।
আকাশকে মারতে দেখে সহপাঠীরা এগিয়ে এলে অভি ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে বঙ্গবন্ধু হলে আশ্রয় নেয়। পরে আকাশ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি কাজী লিংকনকে ডেকে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু হলের অতিথি কক্ষে দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।
ভুক্তভোগী আকাশ বলেন, আমাদের সেশনের সংগঠন নিয়ে শুরু থেকে আমরা বিভিন্ন বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থী কাজ করছিলাম। মঙ্গলবার প্রত্যেক বিভাগের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য মিটিং ডাকা হয়েছিল। মিটিংয়ের এক পর্যায়ে অভি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে সাইডে ডেকে নিয়ে বলে, এখন থেকে এই সংগঠনে তারা লিড দেবে। আমি যেন আমার সঙ্গে থাকা কাগজ-পত্রগুলো তাকে দিয়ে সরে যাই। আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভি ও তার সঙ্গীরা আমাকে উপর্যুপরি মারতে থাকে। এসময় আমাকে মারতে দেখে আমার সহপাঠিরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।
এদিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর সরকার অভি বলেন, এ ধরণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমার ইয়ারের কিছু বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে একটা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে এটা মিটমাট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, প্রথম বর্ষের দুই পক্ষের কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা গণ্ডগোল হয়েছিল। পরে দুই পক্ষকে ডেকে এনে আমি সাধারণ সম্পাদকসহ বিষয়টি মীমাংসা করে দেই।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব