এক মাস বিরতির পর আবারো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশ এবং ‘উপাচার্য বিরোধী’ শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’। কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়েই আজ মঙ্গলবার ৬ দফা দাবিতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এছাড়া দাবি আদায় না হলে লাগাতার এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম তালুকদার ওরফে তারেক রেজা।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, “নতুন দু’টি দাবিসহ যে ৬ দফা দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। এর মধ্যে আগামীকাল বুধবারের ভেতর আইন অনুষদের ডিনকে অপসারণ করে অাইন অনুষদেরই কোনো একজন শিক্ষককে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবিও রয়েছে। না দিলে ২৬ জুলাই, বৃহস্পতিবার প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য যে প্রবেশিকা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে তা যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের দায়িত্বভার তাদের নিজ নিজ ডিনের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু আইন অনুষদে সহকারি অধ্যাপক থাকা সত্বেও উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার কাছের ব্যক্তিকে এই অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আর এভাবেই উপাচার্য একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন।”
এছাড়া প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর ৬ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর তাদের জন্য প্রবেশিকা অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এটিকে বর্তমান প্রশাসনের ‘ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) অনুষ্ঠিতব্য প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
এদিকে দিনব্যাপী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ফলে বন্ধ ছিল সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম। সংগঠনটির শিক্ষকরা যে সকল দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন তা হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী আইন অনুষদের ডিন নিয়োগ, প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব প্রদান, উপাচার্যের অধ্যাদেশ, স্ট্যাটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি ‘লঙ্ঘনের’ প্রতিবাদ, উপাচার্য প্যানেল ও জাকসু নির্বাচন এবং শিক্ষক ‘লাঞ্ছনা’র বিচার।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, “অবরোধের কারণে ৪টি সিলেকশন বোর্ড বাতিল করেছি, কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়ে উপাচার্যের অফিস ঘেরাও করা আইন বিরোধী, বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা নেয়ার কথা চিন্তা করবে।”
প্রসঙ্গত, উপাচার্য পদকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ এপ্রিল থেকে উপাচার্যের অ্যাক্ট ‘বিরোধী কর্মকান্ডের’ প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছে উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের এই সংগঠনটি।
বিডি প্রতিদিন/২৪ জুলাই ২০১৮/এনআরএইচ