শুক্রবার দুপুর আড়াইটা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) স্টেডিয়ামের সামনে একে একে জড়ো হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সকল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। বেলা ৩টা বাজতে বাজতে উপস্থিত সব সংগঠনের নেতারা। তবে তখনো অপেক্ষা চলছিল। অপেক্ষা তখন শুধু ছাত্রলীগের জন্য। অবশেষে সেই অপেক্ষারও অবসান ঘটে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন ছাত্রলীগের নেতারা।
আর সেখানেই শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের মিলনমেলা। যা গত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেখা যায়নি রাবি ক্যাম্পাসে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাবি সংসদের এক প্রীতিভোজ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামের সামনে আজ শুক্রবার মিলিত হন তারা। প্রীতিভোজ শেষে যেখানে অনুষ্ঠিত হয় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা। আলোচনায় উঠে আসে রাকসু নির্বাচনসহ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়।
সেখানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে সকল ছাত্র সংগঠনের নেতারা আলোচনায় বসা একটা নতুন মাইলফলক। আমরা সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতারা সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে কাজ করতে গেলে অনেক সময় অনেক রকমের ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায়। আপনারা সকলেই আমাদের সেই সব ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা সকলেই একসঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যেতে চাই। আপনাদের কোনো ধরণের পরামর্শ থাকলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।
এ সময় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, অনেক দিন পরে আমরা ক্যাম্পাসে সকলেই একসঙ্গে বসতে পেরেছি। ২০০৯ সালের পর সকল ছাত্র সংগঠনের নেতারা এভাবে একসঙ্গে বসা এটাই প্রথম। তাই আমি মনে করছি এটা খুবই ইতিবাচক দিক। আমরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাই সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে সাধারণ ছাত্রদের জন্য আমরা সকলেই কাজ করে যাব সেই প্রত্যাশা থাকবে।
আলোচনায় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এ এম শাকিল হোসেন বলেন, আমরা যারা এখানে আছি তাদের মতাদর্শ ভিন্ন হলেও সাধারণ ছাত্রদের জন্য কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সামনে যেহেতু রাকসু নির্বাচন এই নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু করা যায় তা আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় শাকিল হোসেন দাবি করেন, রাকসু নির্বাচনে যেন কোনো মৌলবাদি ও স্বাধীনতা বিরোধী দল অংশ না নেয়। সকল সংগঠানের পক্ষ থেকে রাকসু নির্বাচনের দাবিতে উপাচার্যের কাছে যাওয়ার দাবিও তোলেন শাকিল হোসেন। শাকিল হোসেনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন সকল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
এছাড়াও এসময় বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী রাবি শাখার সভাপতি ফিদেল মনির, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু হাসান, রাকসু অন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আল আমিন প্রধান তারেক, ছাত্র ফেডরেশন রাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মোড়ল, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক তমালিকা বিশ্বাস, গণশিল্পী সংস্থা রাবি শাখার সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাংবাদিক সমিতি ও প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা