বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চতুর্থ দিনে অতিবাহিত হয়েছে। আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দিলেও চতুর্থ দিনে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে চলে মুর্হুমুর্হু স্লোগান।
এদিকে শুক্রবার রাতে উপাচার্য তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠালেও এই বিষয়টি এখন আর শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন। তাই উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটাক্ষ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এর প্রতিবাদে পর দিন থেকে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
২৭ মার্চ মধ্য রাতে উপাচার্য তার একক ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং ২৮ মার্চ বিকেল ৫টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন। এতে শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষুব্ধ হয়। তারা হল ত্যাগ না করে ১০ দফা দাবি বাদ দিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
শুক্রবার আন্দোলনের তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় তারা এই দাবিতে মশাল মিছিল এবং উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
শনিবার টানা চতুর্থ দিনে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে। আর ফাঁকে ফাঁকে চলে স্লোগান।
এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক মুঠোফোনে বলেন, তিনি দুঃখ প্রকাশের পরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অযৌক্তিক। এই আন্দোলন এখন আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে একটি মহল এই আন্দোলনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। তিনি (উপাচার্য) চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ পরবর্তী উপাচার্য হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তারাই আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের খাওয়ার যোগান দিচ্ছেন। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য এখন স্পষ্ট। বিষয়টি তিনি শিক্ষা মন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। মন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সরকারি সম্পদ ঝুঁকিতে ছিল। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ছাড়া তার কোনো বিকল্প ছিল না। শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জন্য তিনি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন