৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:২১
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

দুই ইউনিটে ফেল, অন্য ইউনিটে প্রথম শিক্ষকের বোন!

রংপুর প্রতিনিধি

দুই ইউনিটে ফেল, অন্য ইউনিটে প্রথম শিক্ষকের বোন!

ফাইল ছবি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ (কলা অনুষদ) এবং ‘এফ’ (জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদ) ইউনিটে ফেল করা মিশকাতুল জান্নাত রেকর্ড মার্কস পেয়ে ‘বি’ ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) প্রথম হয়েছেন। 

মিশকাতুল জান্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর সহোদরা ছোট বোন। ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রমে অংশও নেন তিনি। এতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানবিক বিভাগ থেকে তিনটি অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন মিশকাতুল জান্নাত। ‘এ’ ও ‘এফ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও তিনি সামাজিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং সামাজিক অনুষদভুক্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ২৪০২৭৮। 

পরে ভর্তি ও যাচাই-বাছাইয়ের দিন জানা যায়, মিশকাতুল জান্নাত বিশবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর সহোদরা ছোট বোন। তিনি বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের মো. এনামুল বারীর মেয়ে। এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খোদ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া শিক্ষকরা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, ইমরানা বারী ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদানের কিছুদিন পরই ঢাকায় অবস্থান করে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় অদৃশ্য হাতের ইঙ্গিতে একটি হলের সহকারী প্রভোস্টের দায়িত্ব পেয়ে যান। তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই! 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি রিসিভ করেননি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠালেও কোনও প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেলা মুশতারী বলেন, ‘ইমরানা বারীর ছোটবোন এখানে পরীক্ষা দিয়েছে তা আমাদেরকে তিনি লিখিতভাবে জানাননি। মিশকাতুল জান্নাতকে আমরা চিনতাম। ফেসবুকে ছবি দেখেছি। ওকে দেখে আমরা স্তব্ধ হয়ে গেছি যে, এই মেয়ে এখানে কেন এবং মোটেও আমরা খুশি হইনি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. আমিনুর রহমান জানান, উপাচার্য স্যার দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে বেরোবির ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সহোদরা বোনকে অসদুপায়ে একটি ইউনিটের দ্বিতীয় স্থান অধিকার করানোর অভিযোগে গণিত বিভাগের এক শিক্ষককে শাস্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর