১৯৭৩-এর অ্যাক্ট সমুন্নত রাখতে না পারার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা। সোমবার দিবাগত রাত ৯টায় উপাচার্যকে তার নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ করেন তারা।
এর আগে সন্ধ্যায় উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। সাক্ষাৎ শেষে তারা উপাচার্যের বাস ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, উপাচার্যের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বর্তমান ভিসি বলছেন- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ১৯৭৩ অ্যাক্ট অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তাকে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন না। কিন্তু তিনি সেই নিষেধাজ্ঞা আবার অনুসরণ করে চলেছেন এবং কেন তিনি সেটি অনুসরণ করছেন তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা তিনি আমাদের জানাতে পারেননি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের মনে হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত সেই মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছেন না। তাই যতক্ষণ না তিনি তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছেন আমরা আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।'
এর আগে, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ফটকের তালা খুলে দেয়ার জন্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান। তিনি আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আন্দোলন স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করেন। তবে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, বাসভবনে উপাচার্য এম আব্দুস সোবাহানের সঙ্গে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান।
এর আগে গত ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক চিঠিতে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনীত বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালন করেছি। অন্যদের চাকরি দেওয়া এ মুহূর্তে আমার পক্ষে অসম্ভব। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাবি ক্যাম্পাসে সবধরনের নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক