ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসির সংস্কারের জন্য গণপূর্ত অধিদফতরের নতুন নকশা পছন্দ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এতে টিএসসির বর্তমান অবকাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে একটি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে শীঘ্রই নকশার বাস্তবায়ন শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা গণপূর্ত অধিদফতরের সাথে কয়েক দফা বৈঠকের পর নকশা ঠিক করেছে। এর আগে, গত বছর টিএসসির বর্তমান ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুনভাবে নির্মাণের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তখন ‘এর জন্য নতুন নকশার কাজ চলছে’ বলেও জানা গিয়েছিলো।
এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গণপূর্তের ‘টিএসসির সব ভবন ভেঙ্গে করা’ একটি খসড়া নকশা ফিরিয়েও দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কয়েকবার বৈঠক করে অবশেষে নকশার বিষয়ে একমত হয়েছে উভয়পক্ষ।
টিএসসি’র বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, পিডব্লিউডি বিশ্ববিদ্যালয়কে টিএসসি’র খসড়া কয়েকটি নকশা দেখিয়েছিলো। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় একটিকে পছন্দ করেছে। নতুন নকশায় টিএসসির বর্তমান ভবন ও অন্যান্য অবয়বে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। শুধু ইনডোর গেমসরুমের পশ্চিম দিকের অব্যবহৃত সুইমিংপুলের জায়গায় একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।
প্রস্তাবিত ভবনটিও টিএসসির বর্তমান ভবনগুলোর স্থাপত্যরীতির সাথে সংগতি রেখে নির্মাণ করা হবে। এর নিচে দুই স্তর বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং লট থাকবে। আর মূল ভবনটি হবে দশ তলা। যেখানে একটি অডিটোরিয়ামসহ টিএসসির সংগঠনগুলোর জন্য পর্যাপ্ত মহড়া কক্ষ, ইনডোর গেমসরুমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী সকল সুবিধাই পাওয়া যাবে। নতুন ভবনে টিএসসির পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম শিকদার জানান, পিডব্লিউডি এটার দায়িত্বে আছে। তারা নকশাটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেখাবেন। তিনি নকশা চূড়ান্ত করবেন।
বিষয়টি নিয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ সামাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই নকশাটি যেভাবে করা হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য। এটি এখন পিডব্লিউডি’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে, তিনিই চূড়ান্ত করলে কাজ শুরু হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আধুনিক স্থাপত্য কলা বিষয়ে ধারণা আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তার দায়িত্ববোধ, ভালোবাসা আছে। তিনি নিশ্চয়ই এটি পছন্দ করবেন। উপ-উপাচার্য বলেন, এটার লম্বা ‘প্রসিডিউর’ আছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে সরকার নিজে কাজটি করায় দ্রুতই শুরু হবে।
উল্লেখ্য, গ্রিক স্থপতি কন্সটান্টিন ডক্সিয়াডেস ১৯৬০ এর শুরুতে টিএসসি’র নকশা করেন। পরবর্তী সময়ে টিএসসি ভবনটি তৎকালীন সরকারের উন্নয়ন দশকের অংশ হিসাবে নির্মিত হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর