ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুততম সময়ে তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অনুরোধ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়। এতে হাফিজুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন উপাচার্য। তিনি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান হাফিজুর রহমানের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি ডিএমপি কমিশনারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন। এছাড়া, উপাচার্য বিষয়টি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকেও নির্দেশ দিয়েছেন।’
এর আগে, নয় দিন নিখোঁজ থাকার পর রবিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে শনাক্ত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানের লাশ। পুলিশের ভাষ্যমতে, গত ১৫ মে ঢাকা মেডিকেলের সামনে ডাব বিক্রেতার দা দিয়ে হাফিজুর নিজে নিজের শরীর কোপাতে থাকেন। এতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ছাত্রসংঠনগুলোর বিবৃতি, তদন্তের দাবি;
হাফিজুরর হমানের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। সোমবার পৃথক বিবৃতিতে এই দাবি জানায় তারা।
ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা মনে করি, এই মৃত্যুতে উসকানি এবং প্রভাবনার উপস্থিতি রয়েছে। অবিলম্বে হাফিজুরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করতে হবে।’
এদিকে, এই ঘটনায় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে ছাত্র ফ্রন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই রকম একটা ঘটনা ঘটেছে, অথচ প্রক্টর-ভিসি কিছুই জানে না, এরকম হতে পারে না। আবার পুলিশও এ ঘটনা জানলেও এবং প্রথম থেকে এ ঘটনার সাথে থাকলেও (দুজন কনস্টেবল তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়) কেন তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিল না এবং এটা ‘আত্মহত্যা’ কিনা তারও কোনো তদন্ত না করে লাশ মর্গে পাঠিয়ে দিল এবং সেখানে এক সপ্তাহ ধরে পঁচলো। ক্যাম্পাসে প্রচুর সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেনি। এটা শুধু দায়িত্বহীনতা নয় বরং পুলিশ ও প্রশাসনের এই কর্মকাণ্ড ছাত্রদের মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক করছে। তাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার দরকার।’ এছাড়াও ঘটনার তদন্তের দাবিতে সোমবার সকালে রাজু ভাষ্কর্যে মানববন্ধন করে একদল শিক্ষার্থী।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন