১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:২৮
ঢাবিতে ‘দেব স্মারক বক্তৃতা’

‘পারমাণবিক যুদ্ধ প্রশমন করে বারট্রান্ড রাসেল বিশ্বনাগরিকে পরিণত হন’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

‘পারমাণবিক যুদ্ধ প্রশমন করে বারট্রান্ড রাসেল বিশ্বনাগরিকে পরিণত হন’

অনলাইন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা।

বিট্রিশ দার্শনিক ও গণিতবিদ বারট্রান্ড রাসেল কিউবার মিসাইল সংকট থেকে সৃষ্ট পারমাণবিক যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত করতে বিশ্ব রাজনীতিতে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখেন। বিট্রেনের ঘরোয়া রাজনীতিতে সফল না হলেও স্নায়ুযুদ্ধের সময় কিংবদন্তির ভূমিকা নিয়ে তিনি নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তোলেন। এভাবেই রাসেল একজন বিশ্বনাগরিকে পরিণত হন।

বুধবার ‘কিউবার ক্ষেপনাস্ত্র সংকট নিরসনে রাসেলের ভূমিকা’ শীর্ষক ‘দেব স্মারক বক্তৃতা’য় এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. সাজাহান মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোবিন্দ দেব দর্শন গবেষণা কেন্দ্র অনলাইনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও গোবিন্দ দেব দর্শন গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মঈন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম হারুনার রশীদ।

স্মারক বক্তৃতা’য় অধ্যাপক সাজাহান মিয়া বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেকগুলো সংকট তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে কিউবার ক্ষেপনাস্ত্র সংকট ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন, তৎকালীন দুই পরাশক্তির উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ উত্তেজনা নিরসনে বার্ট্রান্ড রাসেল ভূমিকা রাখেন। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি শুধুমাত্র জন এফ কেনেডি এবং নিকিতা ক্রশ্চেভই ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু তাদের সমঝোতার পথ তৈরি ভূমিকা রেখেছেন বার্ট্রান্ড রাসেল।

তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি শান্ত করতে বারট্রান্ড রাসেল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও সোভিয়েত নেতা কালীন ক্রশ্চেভসহ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা, কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রোসহ জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিবকে বারবার টেলিগ্রাম করেন। এছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকায় বিবৃতি পাঠান। তার প্রচেষ্টার ফলস্বরুপ কিউবা থেকে ক্ষেপনাস্ত্র ঘাঁটি সরিয়ে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। কেনেডি কিউবাতে আগ্রাসন না চালানোর ঘোষণা দেন। এছাড়াও তুরস্ক থেকে জুপিটার ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নেন এবং ‘নেভাল কোয়ারেন্টাইন’ উঠিয়ে নেন।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বারট্রান্ড রাসেলের জীবন দর্শনে অসাধারণ মিল রয়েছে। নানা প্রতিকূলকতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তারা সর্বদা মানবতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ কূটনৈতিক শৈলীর পরিচয় দিয়েছেন। তাদের অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক চিন্তা, দর্শন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য।

অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্বকে পররাষ্ট্র নীতি, না হয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে-বিশ্ব রাজনীতির এই যে ধ্বংসাত্মক মনোভাব, তা এখনও শেষ হয়নি। কবে হবে তা-ও বলা যাবে না। তবে এর জন্য বারট্রান্ড রাসেলের মতো মানুষদের প্রয়োজন, যাদের চিন্তা বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে, শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে পারে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর