২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:০৭

‘জিসি দেবের সমন্বয়বাদী দর্শন পৃথিবীতে শান্তি আনতে পারে’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

‘জিসি দেবের সমন্বয়বাদী দর্শন পৃথিবীতে শান্তি আনতে পারে’

‘বর্তমান বিশ্বে ধর্মান্ধতা, বস্তুগত ধর্মনিরপেক্ষতা বা ধর্মনিভর ইহলৌকিক-পরলৌকিক উন্মত্ততার দ্বন্দ্ব নিরসণে বৈচিত্র্য ও বহুত্বের  মধ্যে পরম সত্ত্বা বা ঐক্যের সন্ধান করেছেন গোবিন্দ চন্দ্র দেব। তার সমন্বয়বাদী শান্তির দর্শন পৃথিবীতে শান্তি বয়ে আনতে পারে।’

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দার্শনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেবের (জিসি দেব) ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোবিন্দ দেব গবেষণা কেন্দ্র এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ীর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্দ্রের পরিচালক ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ। মূল প্রাবন্ধিক একই বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন আরার অনুপস্থিতিতে প্রবন্ধ পাঠ করেন তিনি। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন দর্শন বিভাগের অনারারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। 

অধ্যাপক হারুনুর রশীদ প্রবন্ধ পাঠকালে বলেন, বর্তমান বিশ্বে জাতি-ধর্ম বর্ণ নিয়ে যে বিদ্বেষ সেটাকে জিসি দেব অযৌক্তিক বলেছেন। মানুষে মানুষে যারা ভেদাভেদ করে, তিনি তাদের ‘দানব’ বলেছেন। তিনি মনে করতেন, পরম সত্ত্বার মধ্যেই নিহিত আছে সার্বজনীন প্রেম ও মৈত্রীর বাণী। সকল কিছুর মধ্যেই সার্বজনীন প্রেমেই উদ্বুদ্ধ হওয়াই প্রকৃত মানবধর্ম। জিসি দেব তার দর্শনকে ‘সিন্থেটিক আইডিয়ালিজম’ বা সমন্বয়ী ভাববাদ বলেছেন। তিনি তত্ত্বীয় দর্শনকে নিরুৎসাহিত করলেও তত্ত্বকে তিনি জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করেননি। জিসি দেব ভারতীয় ও মুসলিম দর্শন দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন বলেনও মন্তব্য করেন তিনি। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, সর্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের সাথে সাথে জিসি দেবের অগাধ জ্ঞানও ছিলো। সব ধর্মের সারকথা শান্তি। কিন্তু বাস্তবে স্বার্থপর ধর্মান্ধরা নিজের ধর্ম শ্রেষ্ঠতা প্রমাণ করতে গিয়ে মানুষে মানুষে বৈষম্য তৈরি করেছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যায় মেতেছে জঙ্গিবাদী। এর কারণ হিসেবে জিসি দেব বলেছেন, নৈতিক অবক্ষয়, উগ্র বস্তুবাদী মানসিকতা। ধর্মান্ধতার গ্রাসে পড়ে মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ ভূলণ্ঠিত হচ্ছে। তিনি শতবর্ষ বাঁচার ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন। কিন্তু ধর্মান্ধদের শিকার হলেন, ধর্মের নাম দিয়ে যারা পাকিস্তানকে রক্ষা করতে চেয়েছিলো, তারাই ১৯৭১ সালে তাকে হত্যা করেছে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর