সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির সভাপতি এবং রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। ফুটেজে কাঁচি হাতে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনার সত্যতা মিলেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটির সদস্যরা মিলে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক করেছি। আজও বৈঠক করব। আশা করছি আগামীকালের (শুক্রবার) মধ্যে তদন্ত শেষ করে, প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’
এদিকে চুল কেটে দেওয়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষিকার স্থায়ী অপসারণের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিন আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এই অনশনে অংশ নিয়েছেন সেই চুল কেটে দেওয়া ১৪ জন শিক্ষার্থীও। এ ছাড়া তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিকভবনসহ অন্যান্য ভবনেও। ক্লাব ও পরীক্ষাও বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের আরেকটি অংশ বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তারা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য পদেও দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিজেই কাঁচি হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়। এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। যদিও তিনি শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি।
অনশনে অংশ নেওয়া সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। এ কারণে প্রশাসনিক ভবনসহ অন্যান্য কয়েকটি ভবনেও তালা ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আমাদের অনশন ও আন্দোলন চলতে থাকবে। তারা জানান, আমরা ১৪ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে অংশ নিয়েছি। অন্যরা মিছিল-সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করছে। অনশন চলাকালে হাবিবুর রহমান হাবিব ও মাজেদুল ইসলাম নামে দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে তারা আজকে আবারও অনশনে ফিরেছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ