১৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৭:৪৭

অনিয়ম-জঙ্গিতে ধুঁকতে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিয়ম-জঙ্গিতে ধুঁকতে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর দাবি

লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, সিন্ডিকেট ও জঙ্গিবাদে পর্যুদস্ত দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মানবাধিকারকর্মী ড. সুফী সাগর শামস। 

শনিবার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে জনস্বার্থে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি ও জঙ্গি মদদের নানা অভিযোগ তুলে করে দোষীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক দাবি করেন। 

লিখিত বক্তব্যে ড. সুফী সাগর সামস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এতো বেশি অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানও ক্রমেই নিম্নমুখী।’

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ এখনো জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা করছে দাবি করে ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাফিস ইমতিয়াজকে ১০ বছর পর পুনরায় ভর্তি করার প্রমাণ তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করছে বলে দাবি করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির শীর্ষ ব্যক্তিদের কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ছাত্রদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের ৯ সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, এক লাখ টাকা করে সিটিং এলাউন্স, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ এলাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তিসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও জঙ্গি মদদ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জমেছে অভিযোগের পাহাড়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এম এ কাসেম সিন্ডিকেটের হাতে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই জিম্মি হয়ে আছে। 

আজিম-কাশেম ছাড়াও এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা হলেন- প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেনজির আহমেদ, রেহেনা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আজিজ আল কায়সার টিটো। আজিম-কাশেম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অমান্য করে আটটি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং এলাউন্স আদায় করে। এ সকল কমিটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সকল ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে রেখেছে তারা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ-অবৈধ সকল কমিটিতেই আজিম বা কাশেম নিয়ম বহির্ভূতভাবে সদস্য হন।

সংবাদ সম্মেলনে সুফী সাগর শামস জনস্বার্থে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেইসঙ্গে এই অনিয়ম দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। 

লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের পর সাগর শামস সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। সেইসঙ্গে তার বক্তব্য ও অভিযোগের স্বপক্ষে সকল দালিলিক প্রমাণ সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর