দেশের সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা ২,২৫৭টি, যেখানে অধ্যয়ন করছে ৩৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেশের উচ্চশিক্ষাগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৭০ শতাংশ। এদের অধিকাংশই মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।
পুরনো ও গতানুগতিক সিলেবাসে পড়াশোনার পর অনেক শিক্ষার্থী বেকার থাকে—কারণ কারিগরি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার অভাব। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তুলতে স্নাতক সম্মান কোর্সে আইসিটি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা এবং নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
যুগোপযোগী এসব উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকবে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই মন্তব্য করেছেন ।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশের লক্ষ্যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ব্যবহারের মতো প্রযুক্তিগত সব উদ্যোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার গাজীপুরের মাওনায় এক রিসোর্টে আয়োজিত ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ কনটেন্ট উন্নয়ন’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।
ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, স্বাধীনতার পর শিক্ষায় যথাযথ বিনিয়োগ না করায় বাংলাদেশ এখনো অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে। তাই এখনই শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার সময়।
তিনি আরও বলেন, আইসিটি কোর্সের শিক্ষাক্রম প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার পর সরকারের এটুআই ও ইউনিসেফের সহায়তায় অর্জিত ফল খুবই ভালো। আশা করি শিগগিরই এ শিক্ষাক্রম চালু করা সম্ভব হবে, যা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হওয়ার মতো দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।
৩ দিনের এ কর্মশালায় কারিগরি সহায়তা দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রফিক, পলিসি অ্যানালিস্ট আফজাল হোসেন সারওয়ার, হেড অব প্রোগ্রাম আব্দুল্লাহ আল ফাহিম এবং ইউনিসেফের এডুকেশন স্পেশালিস্ট রফিকুল ইসলাম সুজন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক মোছা. সালমা পারভীনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমা তারা।
কর্মশালায় অনলাইন প্রশিক্ষণ ডিজাইন ও স্ক্রিপ্ট রাইটিং, স্ক্রিপ্ট ও কনটেন্ট যাচাই এবং চূড়ান্তকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের আইসিটি শিক্ষক, প্রশিক্ষক, অনলাইন প্রশিক্ষণ ডিজাইন ও কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, এটুআই প্রোগ্রাম ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল