২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:৪৩

মেয়েকে অপহরণের পরে গুম সংক্রান্ত মামলায় বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর


মেয়েকে অপহরণের পরে গুম সংক্রান্ত মামলায় বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার মকরমপুর গ্রামে হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার কথা বলায় নিজের মেয়েকে অপহরণ করে গুম করার মামলায় বাবা লুৎফর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ ১৯ বছর পর বুধবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। গুম হওয়া রাবেয়া খাতুনের খোঁজ আজও মিলেনি।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয় একই এলাকার আব্দুর রশিদ নামে একজনের। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বাবা লুৎফর রহমান। এক পর্যায়ে রাবেয়া খাতুনের চাচা শ্বশুর হাছেন আলীকে তার বাবা লুৎফর রহমানসহ অন্যান্যরা হত্যা করেন। এ ঘটনার একমাত্র চাক্ষুস সাক্ষী ছিলেন তার মেয়ে রাবেয়া খাতুন। এ ঘটনা রাবেয়া খাতুন মেনে নিতে পারেননি। তিনি তার বাবা লুৎফর রহমানকে বলেছেন তার সামনে হাছেন আলীকে হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেবেন। এ ঘটনার পর থেকে বাবা  লুৎফর রহমান তার মেয়ে রাবেয়াকে হত্যা করে অথবা লাশ গুম করার নানান পরিকল্পনা করতে থাকে। ২০০৩ সালে ২০ এপ্রিল তারিখে ১ ডিসেম্বর কৌশলে তার মেয়ে রাবেয়াকে ঢাকায় নিয়ে যাবার জন্য পীরগাছা চৌধুরানী বাজারে ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে নিয়ে যান। সেখানে তার বেশ কয়েকজন সহযোগী ছিলো। কিন্তু রাবেয়া তার বাবার মতলব বুঝতে পেরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে বাধ্য হয়ে লুৎফর রহমান তার মেয়ে রাবেয়াকে বাসায় নিয়ে আসে। এর এক মাস পর ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল থেকে রাবেয়া বেগমের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় রাবেয়া বেগমের ছেলে রাঙ্গা মিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে মায়ের কোনো সন্ধান না পেয়ে পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করে। বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেয়। পুলিশ তদন্ত শেষে রাবেয়ার বাবা লুৎফর রহমানসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেলা শেষে আসামি লুৎফর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানার অর্থ নিহত রাবেয়ার ছেলে রাঙ্গাসহ তার সন্তানদের প্রদান করার আদেশ দেন।

সরকার পক্ষে মামলা পারিচালনাকারী আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেট রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ন্যায় বিচার পেয়েছে বলে জানান।


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর