২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৩:৫৮

ইডেনের তামান্না ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১১ দফা দাবি

অনলাইন ডেস্ক

ইডেনের তামান্না ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১১ দফা দাবি

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা (বামে) ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। ফাইল ছবি

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে নির্যাতন, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন সংগঠনটির একাংশের নেতাকর্মীরা। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ১১ দফা দাবি পেশ করেছেন তারা।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের কাছে লিখিতভাবে এই ১১টি দাবি পেশ করেন তারা। এতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির ১৬ জন সহ-সভাপতি, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ প্রায় ১০০ জন সাধারণ শিক্ষার্থীর সই রয়েছে। 

১১ দফা হলো

১. সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীর ওপর অতর্কিত হামলার বিচার করতে হবে।

২. বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের অকথ্য গালিগালাজের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।

৩. সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে হবে।

৪. গণহারে প্রায় শতাধিক কক্ষ দখলের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।

৫. অধ্যক্ষকে কটাক্ষ করে কথা বলার জবাব দিতে হবে।

৬. ছাত্রী হলের ক্যান্টিনে একচেটিয়া চাঁদাবাজি ও একচেটিয়া রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকেও নিরপেক্ষ হতে হবে।

৭. ক্যাম্পাসের কোনো সিসিটিভি ফুটেজ লুকানো যাবে না। সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ তদন্ত কমিটিকে দিতে হবে।

৮. আবাসিক হলে অবৈধভাবে যে ওয়াইফাই সংযোগ প্রবেশ করানো হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশাসনের মাধ্যমে বের করে দিতে হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে অর্থ নিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ ফেরত দিতে হবে। সেটা ইডেন কলেজের ৪২ জন নেত্রীর সামনে এবং প্রশাসনও উপস্থিতিতেই দিতে হবে।

৯. ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীর যে অশ্লীল ছবি তোলা হয়েছে, তা প্রশাসনের সামনে মুছতে হবে।

১০. বঙ্গমাতা হলের ১১ তলায় যেসব রুম দখলে আছে, তা উদ্ধার করতে হবে।

১১. সহ-সভাপতি মিম ইসলাম (সভাপতির অনুসারী বলে অভিযোগ রয়েছে) এবং সহ-সভাপতি রোকসানা মেয়েদের যে অত্যাচার করেছেন, তা তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

শনিবার রাতে মারধরের পর জান্নাতুল ফেরদৌস আত্মহত্যার হুমকি দেন। এমন অবস্থায় জনরোষের মুখে পড়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা রাতের আঁধারেই হল ছেড়ে পালিয়ে যান।

সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় এই মারধরের শিকার হয়েছেন বলে দাবি জান্নাতুল ফেরদৌসের। তিনি অভিযোগ করে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে কক্ষে আটকে মারধর করা হয়েছে। আমার আপত্তিকর ছবিও তুলে রেখেছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তাদের সমর্থকরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে আমি আত্মহত্যা করবো।’

হামলার ঘটনায় রাত ৩টার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য। এ ঘটনায় রাতেই অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ছাত্রলীগের একাংশসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের হল সুপার নাজমুন নাহার।

এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আজ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।

কমিটির সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখায় সংঘটিত বিশৃঙ্খলার তদন্তে’ এ কমিটি গঠন করা হলো।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ


 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর