রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফোকলোর বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে বিশ্বিবদ্যালয়ের সিরাজী ভবনের সামনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
ভাঙচুরের ঘটনা পরিকল্পিত উল্লেখ করে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরুর সময় কোনো কারণ ছাড়াই কয়েকজন মিলে এই ভাঙচুর চালায়। তখন ভাঙচুরকারীদের দুজনের পরিচয় জানতে বিভাগে আনা হয়। কিন্তু তার আগেই ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এসে প্রক্টর অফিসে নেয়ার নাম করে তাদের বের করে নিয়ে যান। অথচ তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সহযোগী প্রক্টর সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, এই অনুষ্ঠানের আগের দিন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক হাশেম উদ্দিন (সুখন সরকার) আমাদের শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে এখানে অনুষ্ঠান না করার জন্য বলেন। কারণ এটা তারা বরাদ্দ নিয়েছেন এবং মাটি দিয়ে ভরাট করেছেন। তাই অন্য কেউ এখানে অনুষ্ঠান করতে পারবেন না। কিন্তু আমরা প্রক্টরের অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠান করছি। এমনকি পূর্বেও এখানে কয়েকবার অনুষ্ঠান করেছি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানাই।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিভাগের অধ্যাপক সুষ্মিতা চক্রবর্তী, অধ্যাপক তরিকুল আহসান, অধ্যাপক আক্তার হোসেন ও অধ্যাপক আবু হাসান প্রমুখ।
ভাঙচুরকারীদের বের করে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা প্রক্টরিয়াল বডির কোনো শিক্ষার্থীকে আটকে রাখার অধিকার রাখে না। তাছাড়া ফোকলোর বিভাগে গেলে আমাকে অপদস্ত করা হয়। তারপরও বিভাগের শিক্ষকদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসি। যদি এ ঘটনায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে প্রক্টর দপ্তরে তাদের নিয়ে আসব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে সিরাজী ভবনের সামনে ফোকলোর বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে পেছনের সারিতে কয়েকজন চেয়ার ভাঙচুর শুরু করেন। তাদের এই ভাঙচুর দেখে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। পরে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা আক্রমণ করলে তারা পালিয়ে যান। পালানোর পথে দুজন ধরা পড়েন। তাদের ফোকলোর বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সৌমিক। অন্যজন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আতিক।
ভাঙচুরের বিষয়ে সৌমিক জানান, তারা কয়েকজন পেছনে বসে ছিলেন, তখন কেউ একজন তাকে মারে। এই নিয়ে হট্টগোল বাধে এবং কিছু চেয়ার ভাঙচুর হয়। তখন কয়েকজন ধরে আমাকে ফোকলোর বিভাগের নিয়ে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাশেম উদ্দিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই