৬ মার্চ, ২০২৪ ০২:১৩

দেওয়াল ভাঙাকে কেন্দ্র করে জাবিতে তিন হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

দেওয়াল ভাঙাকে কেন্দ্র করে জাবিতে তিন হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তায় নির্মিত দেওয়াল ভাঙাকে কেন্দ্র করে তিন হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হল তিনটি হলো- শহীদ রফিক জব্বার হল, শেখ রাসেল হল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল। 

মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) রাত ৭ টা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী মাথায় ও শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি ৪ দফা দাবিতে শহীদ রফিক জব্বার হল ছাত্রলীগের নেতৃত্বে হল সংলগ্ন রাস্তায় স্থায়ী দেওয়াল নির্মাণ করেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। 

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন রাস্তায় স্থায়ী দেওয়াল নির্মাণের ফলে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে অসুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। সর্বশেষ গত সোমবার থেকে দেওয়ালটি ভাঙ্গার দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচি শুরু করে ওই দুই হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে দেওয়ালটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি অঙ্কনের চেষ্টা করে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। 

সেসময় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা দেওয়ালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কনে বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীদের সাথে তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়ে রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা হলের ভিতরে চলে যায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েকদফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পটকা ফুটানো, ও ধাওয়া পাল্টার ঘটনা ঘটে। এসময়, উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দেখা গেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রফিক জব্বার হলের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজাউল ও নিশাত গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।


ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অলক কুমার পাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হল সংলগ্ন রাস্তায় স্থায়ী দেওয়াল নির্মাণের ফলে প্রায় ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে বটতলায় আমাদের দুই হলের শিক্ষার্থীদের খাবার খেতে যেতে হয়। পাশাপাশি ক্লাস করতে যাওয়াসহ বিভিন্ন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আসন্ন রমজান মাসে এ ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা একাধিকবার প্রশাসনের কাছে দেওয়াল ভাঙার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু দেওয়ালটি যাতে ভাঙা না যায় সেজন্য  রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি আঁকা শুরু করে। এর ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে দেওয়ালটি ভেঙে আমাদের দুই হলের ভোগান্তি কমাতে হবে। একই কথা জানিয়েছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ছাত্রলীগ নেতা মহিবুর রহমান শুভ।

এদিকে ৪ দফা দাবিতে দেওয়ালটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানায় শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- শহীদ রফিক-জব্বার হলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও খেলার মাঠ নির্দিষ্টকরণ, হলের সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা সংস্কার ও হলের মসজিদে স্থায়ী ইমাম নিয়োগ, ডাইনিং এর অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ ও কমনরুমের প্রয়োজনীয় উপকরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, এবং হলটির সামনে দিয়ে তাজউদ্দীন আহমদ হল ও শেখ রাসেল হলের বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এরজন্য প্রয়োজনে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিবো।

 
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর