জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ময়মনসিংহ জেলা ছাত্র কল্যাণের উপদেষ্টা পদ পেতে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল-আমিনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে জবি ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা নাহিয়ান বিন হক অনিক শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের অনুসারী। রবিবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আল-আমিনের সঙ্গে থাকা আরেক শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগী ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের আল আমিন এবং বাংলা বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের রিয়ান রাব্বি কিন। আল আমিন জবিস্থ ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রকল্যাণের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, আমি সাধারণ শিক্ষার্থী। রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই কিন্তু রবিবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে ক্যাম্পাসের টিএসসি সংলগ্ন এলাকায় ময়মনসিংহ জেলার ছাত্র কল্যাণের নতুন কমিটির জন্য সাবেক-বর্তমানরা বসে আলোচনা করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে অনিক কয়েকজনকে নিয়ে এসে আমাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে আমার সঙ্গে থাকা রাব্বি বাধা দিলে তাকে মারধর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল নেতা অনিক নেত্রকোনা জেলার হয়ে থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রকল্যাণের উপদেষ্টার পদ পেতে চান। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা ছাত্রকল্যাণের অন্য শিক্ষার্থীরা বিরোধিতা করেন। এর জেরে গতকাল রাতে আমাকে মারধর করে অনিক এবং তার সহযোগীরা। আমি চোখে, কানে, হাঁটু সহ মুখে অনেক আঘাত পেয়ে রাতে আহত অবস্থায় খিলগাঁও আল খিদমাহ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের নাহিয়ান বিন হক অনিক, তুষার পাল, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের রাশেদ বিন হাশিম, আহম্মেদ কাওসার আকাশ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের রাশেদুল ইসলাম রাহাত, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মিয়া রাসেল, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সোলাইমান খান সাগর, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইসরাফিল এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওমর ফারুক সহ অন্যরা হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টিএসসির সিরাজের চায়ের দোকানে মান্নান নামের সাবেক শিক্ষার্থী জুনিয়রদের সঙ্গে আড্ডাকালে অতর্কিত হামলা করে অনিক ও তার সহযোগীরা। এতে দোকানের কয়েকটি গ্লাস ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করে তারা। এ-সময় পুরো টিএসসি এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাহিয়ান বিন হক অনিক বলেন, আমরা আল-আমিন নামের কোনো ছেলেকে মারধর করেনি। টিএসসিতে বসে থাকাকালীন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে টিএসসি থেকে বের করে দিতে চায়। তখন আমরা সেখানে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছি। আমি শুনেছি সেখানে ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতি এসে কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলায় শিক্ষার্থীরা তাকে বের করে দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার সিরাজ বলেন, ‘ওরা হঠাৎ করে এসেই একজনকে মারা শুরু করে। অনেক সিনিয়র, কাউকেই চিনি না। কয়েকটি কাপ ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙে ফেলেছে।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় ক্যাম্পাসে যায়নি। তবে মারামারির একটি ঘটনা শুনেছি। ঘটনা সত্যি হলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলামকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম