জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আসাদুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসের প্রতিটি আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছে। আজ যে রিয়াজুল ইসলামের নামে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তিনি বিগত সরকারের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সামনে থেকে প্রতিবাদ করেছেন। আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থান চাই। আপনারা আপনাদের রাজনৈতিক আচরণ পরিবর্তন করুন। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে ছাত্রদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটেছে।
আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর একটার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
আর কোনো রাজনৈতিক দাসত্বে আর পা দেবে না তারা। ফলে যদি ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতে চান, শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে রাজনীতি করতে হবে। আগের মতো স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে দেওয়া হবে না।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা জসীমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গত নভেম্বরে রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ সব ছবির অভিযোগ তোলা হয়েছিল।
তখন কি তিনি ফেসবুকে ঢোকেন নি? এ সব উদ্দেশ্য প্রণোদিত কর্মকাণ্ড আমরা বুঝি। তবুও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাতে অস্থিতিশীল না হয়, আমরা এটাকে ভুল বুঝাবুঝি হিসেবে কাউন্ট করছি।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে নিজের অতীত ইতিহাস জানিয়ে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, গতকাল সূত্রাপুর থানায় নাগরিক কমিটির একটা সভা ছিল, আলোচনার শেষের দিকে সবাই লক্ষ্মীবাজারের চাঁদাবাজির বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছিল। বিকাল ৫টার পর সোহরাওয়ার্দী কলেজের ২০০৮/০৯ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী ছাত্রদলের সভাপতি জসিম দাঁড়িয়ে বলেন- আপনি কি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের? আমি বললাম, জ্বি। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন- আপনার পরিচয় কি? আমি উত্তর দেই- আমি জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি।
এরপরেই তিনি বলেন- আপনি কি ইব্রাহীম ফরাজিকে চিনেন? আমি বললাম জ্বি, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে তাকে চেনা স্বাভাবিক। তিনি বললেন, আমি একটা ছবিতে দেখলাম তার সাথে আপনার ছবি, সুতরাং আপনি ছাত্রলীগ করেন এবং এখন কোনো অবস্থায় শিবির করতে পারেন না, ছাত্রলীগের সাথে যাদের ছবি থাকে তাদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করতে হবে। এটা বলেই তারা ৭-৮ জন মারতে আসে এবং তার কর্মীরা সবাই চেয়ার ভাঙতে শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাই রাজনৈতিক সহাবস্থান। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থা তৈরি হোক তা চাই না। কিন্তু পুনরায় যদি এমন ঘটনার কেউ পুনরাবৃত্তি করতে চায়, তাহলে আমরা বসে থাকবো না। তাই সকলের প্রতি আহ্বান রইলো, আমরা চাই সবাই মিলে মিশে থাকতে এবং অন্যদের উচিৎ হবে তাদেরও এই অবস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করা।
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন :
এদিকে, জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলামকে হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ছাত্রলীগ ফ্যাসিস্টের সহায়তায় দেশে তাদের অপকর্ম চালিয়ে গেছে। এখন ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন করে একটি দল অপকর্ম চালিয়ে যেতে তৎপর হচ্ছে। জগন্নাথে কোনো শিক্ষার্থীর যে কোনো সমস্যায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একত্রিত থাকবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো মত বা দলের শিক্ষার্থীর উপর অন্যায়মূলক কোনো আচরণ করা হলে, কোনো হেনস্তা করা হলে, কোনো উগ্র আচরণ করা হলে আমরা তা রুখে দিব।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন