আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
বুধবার বুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এন এম গোলাম জাকারিয়ার সই করা বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আজ বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর টিয়ারগ্যাস, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের বদলে পুলিশ কর্তৃক এহেন নির্মমভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বুয়েট প্রশাসন পুলিশের এহেন আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, মর্মাহত এবং এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে এ হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বুয়েট প্রশাসন আশা করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলীদের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা ও সুসংহত করাসহ সংশ্লিষ্ট গ্রেডে কোটা সংক্রান্ত বৈষম্য দূর করার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ২৬ আগস্ট দুপরে বুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুততম সময়ে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান।
এর ধারাবাহিকতায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবিসমূহের যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের নিমিত্তে আজ ২৭ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেওয়া, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা এবং দশম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়া- এই তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) পাঁচ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করেন। আজ পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগের মূল সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীরা বেলা দেড়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভন যমুনা অভিমুখে রওনা দেন। তারা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় পেরোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের পাশাপাশি পুলিশ লাঠিচার্জও করে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, পুলিশের হামলায় ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, তাদের লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের কয়েকজন সদস্য।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত