মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত হাওর কাউয়া দিঘি। হাওর পাড়ের মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র ভরসা হাওরে উৎপাদিত এক ফসলি বোরো ধান। উপযুক্ত সড়ক পথ না থাকায় কৃষকরা গাংগের পাড়কে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে যুগ যুগ ধরে।
কিন্তু এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা এই গাং পাড় দখল করে ডোবা ও ক্ষেতের জমি বানিয়ে ফেলছে। হাওরে রয়েছে ছোট বড় মিলে প্রায় ২২টি গাং। এ গাংগুলো যুগ যুগ ধরে খনন না হওয়াতে ভরাট হয়ে হারিয়েছে নাব্যতা। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজারো কৃষক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাওরের মাছু গাং, দিগলা গাং, খইলতা গাং, ধলীয়ার গাংসহ অন্যান্য গাংয়ের জরাজীর্ণ অবস্তা। কোন কোন গাং একেবারেই পানি শূন্য। আবার কোন কোন গাংয়ে অল্প পানিতে ধানবোঝাই নৌকা ঠেলে ঠেলে ও টেনে টেনে পাড়ে নিতে হয় কৃষকদের। অন্যদিকে গাংগুলোর দুই পাড় দখল করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।
পশ্চিমভাগ গ্রামের কৃষক আব্দুল আহাদ, সমছু মিয়াসহ অনেকে জানান, ভাল রাস্তা না থাকায় নদীর পাড় দিয়ে যাতায়াত করতে হয় এবং ধান পাকার পর বাড়িতে আনতে হয় নৌকাবোঝাই করে। গাংগুলো ভরাট হয়ায় শুকিয়ে গেছে। তাই আমরা কৃষকরা বিপদে আছি। বোরো ধানে চলে আমাদের সারা বছরের খোরাক ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচপাতি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি, মাছু গাং, দিগলা গাং, খইলতা গাং, ধলীয়ার গাংগুলো খনন ও পাড়কে দখল মুক্ত করে দেয়ার জন্য।
কুবঝাড় গ্রামের বিলাল মিয়া জানান, গাংগুলো ভরাট হওয়ার কারণে ক্ষেতের শুরুতে পানি সংকটে আমাদের ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র সরকার চক্রবর্তী বলেন, আমরা ইতিমধ্যে হাওর কাউয়াদীঘিতে দুইটি খাল খনন করেছি। পর্যায়ক্রমে হাওরে ভরাট হওয়া খাল, চড়া, গাংগুলো খনন করা হবে। এই উদ্যোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা