১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০২:১৬

আজ কমলগঞ্জে রাস উৎসব

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :

আজ কমলগঞ্জে রাস উৎসব

চন্দ্র মাসের প্রথম দিনে যেদিন সন্ধ্যার আকাশে হেসে উঠেছিল এক চিলতে চাঁদ, সেদিন আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিল মণিপুরিরা। এ পক্ষেই যেদিন আকাশে কোলজুড়ে হেসে উঠবে পূর্ণিমার চাঁদ, সেদিন মণিপুরিরা মেতে উঠবে রাস উৎসবে। আজ সেই দিন, মণিপুর সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব মহারাস লীলা। 

রাস উৎসবকে ঘিরে গত এক মাস ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ও আদমপুর মণিপুরী পাড়ার ঘরে ঘরে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। রং ও কাগজের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। মাধবপুরে মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায়ের আয়োজনে এবার জোড়া মণ্ডপে ১৭৭তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আর আদমপুরে মীতৈ সম্প্রদায় উদযাপন করেছে ৩৪তম মহারাসলীলা। 

জানা যায়, আদমপুরে পাশাপাশি দুটি স্থানে আদমপুর জোড় মণ্ডপ ও মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে থাকবে রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। আর মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ পৃথক পৃথক স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্তঃস্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থনা সব একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সত্য সুন্দর মানবপ্রেম।

রাস উৎসব আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ‘মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র প্রথম মণিপুরে শ্রীশ্রীমহারাসলীলা বা রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। ‘রাস’ শব্দটা এসেছে জগৎপতি কৃষ্ণের ১২ ধরনের রস থেকে। এই রাসের সঙ্গে মেলা যুক্ত হয়ে ‘রাসমেলা’ হয়েছে। তবে ১২টি রসের মধ্যে রাসলীলায় মূলত সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর এই তিনটি রসের উপস্থাপনাই হয়ে থাকে। উৎসবটা মণিপুরী সম্প্রদায়ের হলেও এটি এখন ধর্মীয় গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত মণিপুরী সংস্কৃতির বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। উৎসবকে সফল করতে প্রায় মাস খানেক ধরে ছয়টি বাড়িতে রাসনৃত্য এবং রাখাল নৃত্যের প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিচালিত হয়।’

মাধবপুর ও আদমপুরে রাসমেলার আয়োজকরা জানান, ‘মহারাসলীলাল মূল উপস্থাপনা শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে ‘গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্যে’র মধ্য দিয়ে। গোধূলি পর্যন্ত চলবে রাখালনৃত্য। রাত ১১টা থেকে পরিবেশিত হবে মধুর রসের নৃত্য বা শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ। এই রাসনৃত্য বুধবার ভোর (ব্রাহ্ম মুহূর্ত) পর্যন্ত চলবে।’ 

মাধবপুর মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, ‘আমাদের কাছে হেমন্তকাল মানেই রাস-পূর্ণিমা, রাস উৎসব। আদমপুর মহারাস উদ্যাপন কমিটির নেতা ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ‘আমাদের সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। উৎসব সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হবে।’ জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথিরা থাকবেন।’

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর