১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২১:৫২
সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ

লটারিতে ভাগ্য খুলল দালালের, কপাল পুড়ল কৃষকের

মৌভলীবাজার প্রতিনিধি

লটারিতে ভাগ্য খুলল দালালের, কপাল পুড়ল কৃষকের

সরকার প্রথমবারের মতো কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে লটারির মাধ্যমে বাছাইকৃতদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করছে। কিন্তু মৌভলীবাজারের রাজনগর উপজেলায় কৃষি অফিসের দায়িত্বহীনতার কারণে সরকারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। 

এদিকে, লটারির মাধ্যমে ধান সংগ্রহের লটারিতে ভাগ্য খুলেছে দালালের আর কপাল পুড়েছে কৃষকের এরকম কথা শোনা যাচ্ছে উপজেলাজুড়ে। এ নিয়ে উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, রাজনগর উপজেলায় ২৪ হাজার ৩৫০ জন কার্ডধারী কৃষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৪৩৭ মেট্টিক টন ধান বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারিভাবে ধান বিক্রির জন্য ৯ হাজার ৫০০ জন কৃষক আবেদন করেন। এর মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ১ হাজার ৪৩৭ জন কৃষককে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। 

তবে সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বাছাইকৃত ১ হাজার ৪৩৭ জন কৃষকের মধ্যে অধিকাংশই প্রকৃত কৃষক নয়। দেখা গেছে, যারা এবার আমন ধান চাষাবাদ করেননি তারাও লটারিতে বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীদের মধ্যে যারা আমন চাষ করেননি তাদের কৃষি কার্ড ক্রয় করার জন্য দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দালালরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় কার্ড কিনছে। 

উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভাগ গ্রামের মুল্লুক মিয়া, ভুমিউরা গ্রামের নেওয়ারুন, পশ্চিম ভাগ গ্রামের সেলিম মিয়ে, মৃত সন্টু পাল, কানিকিয়ারি গ্রামের ছানুর মিয়া, মছব্বির মিয়াসহ উপজেলার প্রায় অনেকের নাম এভাবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

এদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা যাছাই-বাছাই না করে তালিকা দেয়ায় এমন বৈষম্য হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ। 

উপজেলার পশ্চিম ভাগ গ্রামের কৃষক এনাম মিয়া, জিল্লু মিয়া, ফয়ছল মিয়া ও সামছুল মিয়া এবং ভুমিউরা গ্রামের সামছুল মিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ২০-২৫ কেয়ার জায়গা চাষাবাদ করেও সরকারিভাবে দান বিক্রি করতে পারছি না। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি না। অথচ যারা চাষাবাদ করেন না তাদেরকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

রাজনগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহাদুল ইসলমা বলেন, ধান বিক্রি করার জন্য সকলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় লটারির মাধ্যমে বাছাই করা হয়েছে। বাছাইকৃতদের মধ্যে চাষাবাদ করেননি এমন কেউ থাকলে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে প্রকৃত কৃষকের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর