২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ২২:১৩

অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসলেন!

অনলাইন ডেস্ক

অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসলেন!

প্রতীকী ছবি

এডিস নিক্ষেপের মিথ্যা মামলা দিয়ে আরেকজনকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছেন আজিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। এডিস অপরাধ দমন আইনে তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। 

সিলেটের এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বজলুর রহমান আজ রবিবার এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে আজিম উদ্দিনকে।

আজিম উদ্দিন সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার জাকিরপুরের মৃত তৈয়ব উল্লাহের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জেলা গোয়েন্দা শাখার তৎকালীন এসআই মোহন লাল তালুকদার মামলা করেছিলেন।

রায়ে আদালত আজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা জজ আদালতের এপিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম বলেন, মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৭ মার্চ আজিম উদ্দিন তার মেয়েকে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে একই গ্রামের আলীম উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ওসমানীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 

আজিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালের ৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘরে শুয়ে থাকা তার মেয়ে পারভিন আক্তার সুজিনার (ওই সময় বয়স ১৬) উপর ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করেন আব্দুর রাজ্জাক। এসিডে সুজিনার পিঠের বামপাশ ও শরীরের অন্যান্য স্থানে ক্ষত তৈরি হয়। পরে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওসমানীনগর থানার তৎকালীন এসআই হুমায়ুন কবির মামরার তদন্ত করেন। ওই সময় আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতারও করা হয়। তবে ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আব্দুর রাজ্জাককে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে আজিম উদ্দিন নিজেই এসিড বা ক্ষয়জাতীয় পদার্থ দিয়ে সুজিনার পিঠ জলসে দেন। পরে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন করেন। একইসাথে আজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করার আবেদন জানান। আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

জেলা গোয়েন্দা শাখার তৎকালীন পরিদর্শক এম সফিউজ্জামান মামলাটি তদন্ত করেন। তার তদন্তেও আজিম উদ্দিনের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনিও আজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করতে আদালতে আবেদন জানান। জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আজিমের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।

এ প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জেলা গোয়েন্দা শাখার তৎকালীন এসআই মোহন লাল তালুকদার ওসমানীনগর থানায় আজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রবিবার আদালত আজিম উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে রায় প্রদান করেন।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর