শিরোনাম
১৯ মে, ২০২২ ২১:০৪

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট:

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসা কমায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি সকল পয়েন্টে কমেছে ও কুশিয়ারাতে কিছুটা বেড়েছে। উভয় নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা আক্রান্ত কিছু কিছু উপজেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত না হলে আগামী দু’তিনদিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। সিলেট নগরী ও বিভিন্ন উপজেলা এখনো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সিলেটে ভারী বর্ষন হয়েছে। তবে উজানে ভারতের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সিলেটের নদ-নদীর  পানি বাড়েনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় এ দুই পয়েন্টে যথাক্রমে বিপৎসীমার ১৪৬ ও ৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জকিগঞ্জের আমলসীদে বিপৎসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার ও শেওলায় ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগের দিন একই সময়ে দুই পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল যথাক্রমে বিপৎসীমার ১৭২ সেন্টিমিটার ও ৫৬ সেন্টিমিটার উপরে। 

সুরমা নদীর পানির কমায় কানাইঘাটের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধে স্থানীয় লোকজন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো রাস্তাঘাট, হাট-বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ধলাই নদীর পানি কিছুটা কমায় কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলারও বন্যা পরিস্থিতির কিছু উন্নতি হয়েছে। কুশিয়ারা নদীতে পানি বাড়লেও বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে জকিগঞ্জ উপজেলার। এছাড়া গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও দক্ষিণ সুরমার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। 

দুপুর পর্যন্ত বাড়লেও বিকেল থেকে সিলেট নগরীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন।
এদিকে, বন্যার কারণে এখনো স্বাভাবিক হয়নি সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। সিলেট নগরীর উপশহর, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, তালতলা, জামতলা, সাদিপুরসহ বন্যা আক্রান্ত এলাকায় খাবার ও গৃহস্থালীর ব্যবহারের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানি ওঠার অনেকেই বাসা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ওঠেছেন। বিশেষ করে নগরীর উপশহর এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। একদিকে বন্যার কারণে খাবার পানির সংকট অন্যদিকে চলছে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র খাবার পানির সংকটেও পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ। এছাড়া জেলার সবকটি উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলা সদরে কোনমতে সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলেও বাকি বেশিরভাগ এলাকা রয়েছে বিদ্যুৎহীন অবস্থায়। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক হবে না এমনটা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর