২৮ মে, ২০২৩ ১৩:০০

বিলুপ্ত পেশা ‘শান কারিগর’

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ

বিলুপ্ত পেশা ‘শান কারিগর’

বিশেষ কায়দায় তৈরি মেশিনে দা শান দিচ্ছেন শান কারিগর আবদুল মনাফ। ছবিটি বিশ্বনাথ নতুন বাজার থেকে তোলা। ছবি-বাংলাদেশ প্রতিদিন

যুগ পাল্টেছে। পাল্টেছে কর্মকৌশলও। নিত্য নতুন আবিষ্কারে জীবনযাত্রায় এসেছে অভাবনীয় পরিবর্তন। আগে গ্রামগঞ্জে ফেরি করে হরেক পেশা অবলম্বনে জীবিকা নির্বাহ করতেন শ্রমজীবী মানুষ। তেমনি একটি বিলুপ্তপ্রায় কাজ হচ্ছে ‘শান কারিগর’।

বিশেষ কায়দায় তৈরি শান দেওয়ার যন্ত্র কাঁধে নিয়ে সারা বছরই গ্রামীণ জনপদে ঘুরতেন কারিগররা। প্রায়ই শোনা যেত এ কাজে যুক্ত লোকদের হাঁকডাক ‘শান লাগে গো শান...’। কাজ পেলেই উঠানে বসতো শানের ভ্রাম্যমাণ মেশিন। কারিগর প্যাডেল ঘুরিয়ে শান দিতেন ছুরি, চাকু, চাপাতি, দা, বটি, কুড়াল, শিলপাটা ও সুপারি কাটার সরতা।

যান্ত্রিকতায় টিকতে না পেয়ে এই পেশা বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায়। এখন কেবল কোরবানি ঈদ এলেই দেখা মেলে এ কারিগরদের। তাও অপ্রতুল। ওই সময় কিছুু কাজ পাওয়ায় রোজগার হয় মোটামুটি। যারা এখনো বংশ পরম্পরায় এ পেশা ধরে রেখেছেন, তারাই বের হন কাঁধে শান মেশিন নিয়ে। ঘোরেন গ্রাম থেকে গ্রামে।

এ পেশায় আগে বছরব্যাপী সংসার চললেও বর্তমানে মৌসুম ছাড়া অচল। সম্প্রতি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় দেখা মিলে এমন একজন শান কারিগরের, যিনি এখনো হাল ধরে আছেন পৈতৃক পেশার। তার নাম মো. আবদুল মনাফ (৬০)। তিনি হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার স্বরুপখানি গ্রামের বাসিন্দা।

তিনি জানান, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যুক্ত রয়েছে এ পেশায়। আমি আমার এক চাচার কাছ শিখেছি এ কাজ। দেশের বিভিন্ন জেলায় শান মেশিন কাঁধে করে এ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ছুরি ২০, চাকু ১০, চাপাতি ৪০, দা ৪০-৫০, বটি ৫০-৬০, কুড়াল ৪০, শিলপাটা ৮০ ও সুপারি কাটার সরতা ১৫ টাকা করে ধারালো করে দেই।

তিনি আরও জানান, ঈদে অনেক পশু জবাই হয়। প্রতিটি পরিবারেই ছুরি-চাকু ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে। ফলে অন্যান্য সময়ের চেয়ে রোজগার বাড়ে। তাই কেবল ঈদের আগে কয়েক সপ্তাহ একাধারে কাজ করি। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময় কৃষি কাজ করেই খেতে হয় আমাদের।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর